পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি)‘র চলমান এ প্রকল্প শেষ করতে যদি আরো অর্থ লাগে তাহলে প্রধানমন্ত্রী বরাদ্ধ দিবেন।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) বিকালে নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা এলাকার নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ণ কাজের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি সানজিদা খানম, এ প্রকল্পের মহাপরিচালক (২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেড) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেখার আনিস, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্ণেল মোঃ তৌহিদ হোসেন(পিএসসি), প্রকল্প পরিচালক (২০ ইসিবি) লেঃ কর্ণেল মোঃ রোমিও নওরীণ খান(পিএসসি), এছাড়াও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের ও ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড এর অফিসার, জেসিও এবং অন্যান্য পদবীর সৈনিকগণ ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ।
মন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকভাবে এ প্রকল্পটি চাষাবাদের সেচের জন্য করা হয়েছিল যেন বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে ফসল নষ্ট না হয়। রাজধানীর কাছাকাছি হওয়ার কারণে এ এলাকাটির অনেক পরিবর্তন হয়েছে এবং বিভিন্ন বড় বড় মিল ফ্যাক্টরী এবং আবাসিক এলাকায় বাড়ী-ঘর নির্মাণ হয়েছে। ফলে প্রচুর লোক এখানে বসবাস করছে।
কিন্তু যেভাবে পরিকল্পনা করে করা উচিৎ ছিলো সেভাবে করা হয়নি। হয়তো সেটা আমাদের উপলব্দি করা উচিৎ ছিলো, যে জায়গাটা চাষের উপযোগী থাকবেনা। যেহেতু এটা রাজধানীর কাছাকাছি সেহেতু এর সেভাবে উন্নণ করার প্রয়োজন ছিলো। এখন যেভাবে মানষ বাস করে সেটাকে বাসযোগ্য বলা যায়না। বিশেষ করে বর্ষাকালে এখানে সম্পূর্ন বন্যা কবলিত হয়ে যায়। মানুষ বাড়ীতে বসবাস করতে পারেনা, আমাদের শিল্প-কারখানার ক্ষতি হয়। সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডিএনডির যে বন্যা সমস্যা রয়েছে তা সমাধান করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এতে শামীম ওসমানের অনেক ভুমিকা রয়েছে। তিনি বার বার আমার কাছে গিয়েছেন এবং পরিকল্পনা মন্ত্রীকেও এখানে নিয়ে এসেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জোর করে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে এ অর্থ ব্যয় করাচ্ছেন। আমরা একসময় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে এটি সিটি কর্পোরেশনকে ছেড়ে দিবো এবং সিটি কর্পোরেশন এ কাজটি করার কথা ছিলো কিন্তু শুধু শামীম ওসমানের পিড়াপিড়িতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে এটি পানি উন্নয়ণবোর্ডই করবে।
সে লক্ষে আমরা ৫‘শ ৫৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেই। আর এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ণ করতে শামীম ওসমানের অনুরোধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দেয়া হয়। এই প্রকল্পটি সুন্দরভাবে বাস্তবায়ণ করতে যদি আরো অর্থ প্রয়োজন হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তা বরাদ্ধ দিবেন বলেও আশ্বস্থ করেছেন যেন প্রকল্পটি শেষ হলে মানুষ তার সুফল ভোগ করতে পারে।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) এলাকার নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ণ (২য় পর্যায়ে) প্রকল্পটি প্রায় ৫৯ বর্গ কি.মি. এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থায় একটি স্থায়ী সমাধান আনয়ন করবে। এতে প্রায় ২০ লাখ মানুষের দীর্ঘ সময়ের দু:খ দূরীভুত হবে। এই এলাকার জনগনের স্বভাবিক জীবনমান নিশ্চিত হবে।
সর্বোপরি আথ-সামাজিক ও পরিবেশগত মান উন্নয়ণ এবং এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী উন্নতি ঘটবে। বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে খালসমুহের দু’পার্শ্বে বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে সবুজায়ন করা হবে। এছাড়া স্থানীয় জনগনের চলাচলের সুবিধার্থে ইটের রাস্তা নির্মিত হবে, যা ভবিষ্যতে উন্নত পাকা রাস্তা করার পরিকল্পনা রয়েছে।