নারায়ণগঞ্জ ০৫:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
আড়াইহাজারে লিজকৃত সম্পত্তির বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের বিচার পতির সাথে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাক্ষাৎ রূপগঞ্জে ইয়াবাসহ জিয়া মঞ্চ দলের নেতা গ্রেফতার মহানগর কৃষকদলের সভাপতি এনামুল হক স্বপন ও সাইফুদ্দিন মাহমুদ ফয়সাল কে হাসান আল মামুনের শুভেচ্ছা সৌদি আরবে “ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলি সোসাইটি”র বনভোজন ও নাশিদ সন্ধ্যা সৌদি প্রবাসী দালাল ইব্রাহিমের বিচারের দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি সিদ্ধিরগঞ্জে মিতালী মার্কেটে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল দেশ রূপান্তরের নতুন সম্পাদক কামাল উদ্দিন সবুজ রিয়াদে এনটিভি দর্শক ফোরামের উদ্যোগে জমকালো আয়োজনে ৫৪তম বিজয় দিবস উদযাপন যুবকদের আগামীতে এইদেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে হবে – মাজেদুল ইসলাম

সিদ্ধিরগঞ্জ আ’ লীগের গর্বের দুর্গের দুর্বলতা স্পষ্ট

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৪:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪
  • ১২৬ বার পড়া হয়েছে

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জকে গর্ব করে আওয়ামী লীগের দুর্গ বলে আখ্যায়িত করেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তাদের গর্বের সে দুর্গের দুর্বলতা ফুটে উঠেছে কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে। আন্দোলনে দুস্কৃতিকারী প্রবেশ করে থানা এলাকায় চালিয়েছে ভয়াবহ ধ্বংসলীলা। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা কোন প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি। দলের এ দুর্বলতার জন্য থানার শীর্ষস্থানীয় নেতাদের দায়ী করেছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

দলীয় একটি সূত্র জানায়, কোটা সংস্কার দাবিতে সম্প্রতি ছাত্র অন্দোলনকে ঘিরে সিদ্ধিরগঞ্জে যে নৈরাজ্য সহিংসতা ঘটেছে, তা মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। ছাত্র আন্দোলনের সুযোগে দুর্বৃত্তরা যখন থানা এলাকার প্রধান সড়ক-মহাসড়ক আবরোধ করে নৈরাজ্য চালাচ্ছিল, তখন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার বিষয়টি আলোচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবুর রহমান দলের ব্যর্থতা স্বীকার না করলেও সহ-সভাপতি ছাদেকুর রহমান বলেন, একসময় সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামী লীগের দুর্গ ছিল। সুবিধাবাদীরা দলে প্রবেশ করে শীর্ষপদে বসেছে। তারা ত্যাগী ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করছে। দলের নাম ভাঙিয়ে নিজস্বার্থহাসিল করছে। তাদের কুটকৌশলে দীর্ঘদিন ধরে থানা ও ওয়ার্ড কমিটি হচ্ছে না। তৈরি হচ্ছেনা নতুন নেতৃত্ব। এতে ক্ষোভ ও অভিমানে অনেকই দলীয় কর্মকা-ে অংশ নিচ্ছেন না। আন্ত:কোন্দল ও অবমূল্যায়নের কারণে দলে ধস নেমেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

একাধিক তৃণমূল নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, কোটা সংস্কার দাবিতে ছাত্র অন্দোলন সিদ্ধিরগঞ্জে শুরু হয় ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে। সেদিন ঢাকা-চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ-আদমজী সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা। গুরুত্বপূর্ণ দুটি সড়ক অবরোধ করায় সবকিছু স্থবির হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পরদিন শুক্রবার মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতাকর্মীরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড় থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত নিজেদের নিয়ন্ত্রনে নেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। দুপুর ২ টার পর থেকে মিজমিজি এলাকায় জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা। অন্য দিকে তাদের সঙ্গে যোগ দিতে শিমরাইল মোড় মুক্তিস্বরণী এলাকায় নির্মাণাধিন সৌদি বাংলা শপিং মলে অপেক্ষায় থাকেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী। এসময় কদমতলীতে ২ গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয় ৫ জন। অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের ধাওয়ায় সৌদি বাংলায় অবস্থানরত যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়। সিদ্ধিরগঞ্জ পুলে তা-ব চালায় আন্দোলনকারীরা। হামলা চালায় থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবুর রহমানের বাসভবনে। এতে প- হয়ে যায় আন্দোলন মোকাবিলার কর্মসূচি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আওয়ামী লীগ নেতা জানান, প্রথম থেকেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা কোন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। ফলে শুক্রবার দুপুরের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিনা বাধায় তা-ব চালিয়ে চাঙ্গা হয়ে উঠে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে থাকা সরকার বিরোধীরা। পর দিন শনিবার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল কম। সাধারণ জনতা বেশে আন্দোলনে যোগদেয় দুস্কৃতিকারীরা। আন্দোলননের সুযোগে তারা বিকেল সাড়ে ৪ টা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শুরু করে সহিংসতা। অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ নানান নৈরাজ্য সৃষ্টি করে তারা। তখন কঠোর হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। এতে একাধিক প্রাণ হানির ঘটনাও ঘটে।

জানতে চাইলে, আন্দোলন চলাকালে নিজ বাড়িতে হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবুর রহমান। তবে দলের ব্যর্থতা মানতে রাজি নন তিনি। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারা বিষয়ে তিনি বলেন, যেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পারেনি, সেখানে আমরা পারবো কি করে।

 

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

আড়াইহাজারে লিজকৃত সম্পত্তির বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট

সিদ্ধিরগঞ্জ আ’ লীগের গর্বের দুর্গের দুর্বলতা স্পষ্ট

আপডেট সময় : ০৪:৩৪:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জকে গর্ব করে আওয়ামী লীগের দুর্গ বলে আখ্যায়িত করেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তাদের গর্বের সে দুর্গের দুর্বলতা ফুটে উঠেছে কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে। আন্দোলনে দুস্কৃতিকারী প্রবেশ করে থানা এলাকায় চালিয়েছে ভয়াবহ ধ্বংসলীলা। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা কোন প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি। দলের এ দুর্বলতার জন্য থানার শীর্ষস্থানীয় নেতাদের দায়ী করেছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

দলীয় একটি সূত্র জানায়, কোটা সংস্কার দাবিতে সম্প্রতি ছাত্র অন্দোলনকে ঘিরে সিদ্ধিরগঞ্জে যে নৈরাজ্য সহিংসতা ঘটেছে, তা মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। ছাত্র আন্দোলনের সুযোগে দুর্বৃত্তরা যখন থানা এলাকার প্রধান সড়ক-মহাসড়ক আবরোধ করে নৈরাজ্য চালাচ্ছিল, তখন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার বিষয়টি আলোচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবুর রহমান দলের ব্যর্থতা স্বীকার না করলেও সহ-সভাপতি ছাদেকুর রহমান বলেন, একসময় সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামী লীগের দুর্গ ছিল। সুবিধাবাদীরা দলে প্রবেশ করে শীর্ষপদে বসেছে। তারা ত্যাগী ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করছে। দলের নাম ভাঙিয়ে নিজস্বার্থহাসিল করছে। তাদের কুটকৌশলে দীর্ঘদিন ধরে থানা ও ওয়ার্ড কমিটি হচ্ছে না। তৈরি হচ্ছেনা নতুন নেতৃত্ব। এতে ক্ষোভ ও অভিমানে অনেকই দলীয় কর্মকা-ে অংশ নিচ্ছেন না। আন্ত:কোন্দল ও অবমূল্যায়নের কারণে দলে ধস নেমেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

একাধিক তৃণমূল নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, কোটা সংস্কার দাবিতে ছাত্র অন্দোলন সিদ্ধিরগঞ্জে শুরু হয় ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে। সেদিন ঢাকা-চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ-আদমজী সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা। গুরুত্বপূর্ণ দুটি সড়ক অবরোধ করায় সবকিছু স্থবির হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পরদিন শুক্রবার মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতাকর্মীরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড় থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত নিজেদের নিয়ন্ত্রনে নেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। দুপুর ২ টার পর থেকে মিজমিজি এলাকায় জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা। অন্য দিকে তাদের সঙ্গে যোগ দিতে শিমরাইল মোড় মুক্তিস্বরণী এলাকায় নির্মাণাধিন সৌদি বাংলা শপিং মলে অপেক্ষায় থাকেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী। এসময় কদমতলীতে ২ গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয় ৫ জন। অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের ধাওয়ায় সৌদি বাংলায় অবস্থানরত যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়। সিদ্ধিরগঞ্জ পুলে তা-ব চালায় আন্দোলনকারীরা। হামলা চালায় থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবুর রহমানের বাসভবনে। এতে প- হয়ে যায় আন্দোলন মোকাবিলার কর্মসূচি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আওয়ামী লীগ নেতা জানান, প্রথম থেকেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা কোন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। ফলে শুক্রবার দুপুরের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিনা বাধায় তা-ব চালিয়ে চাঙ্গা হয়ে উঠে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে থাকা সরকার বিরোধীরা। পর দিন শনিবার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল কম। সাধারণ জনতা বেশে আন্দোলনে যোগদেয় দুস্কৃতিকারীরা। আন্দোলননের সুযোগে তারা বিকেল সাড়ে ৪ টা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শুরু করে সহিংসতা। অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ নানান নৈরাজ্য সৃষ্টি করে তারা। তখন কঠোর হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। এতে একাধিক প্রাণ হানির ঘটনাও ঘটে।

জানতে চাইলে, আন্দোলন চলাকালে নিজ বাড়িতে হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবুর রহমান। তবে দলের ব্যর্থতা মানতে রাজি নন তিনি। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারা বিষয়ে তিনি বলেন, যেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পারেনি, সেখানে আমরা পারবো কি করে।