নারায়ণগঞ্জ ১০:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সৌদি আরবে “প্রবাসী নাশীদ ব্যান্ডের” উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি প্রেসক্লাবের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্টিত রিয়াদে সিলেট সদর উপজেলা প্রবাসীদের উদ্যোগে সংবর্ধণা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ইনভেস্টার নজরুল ইসলামের রিয়াদ গালফ টুলেডো রেষ্টুরেন্টে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত রূপগঞ্জে ৬ দিনেও নিখোঁজ ব্যবসায়ীর সন্ধান মেলেনি রিয়াদে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত সৌদি আরবে ব্যাচ ৯৫-৯৭ এর আয়োজনে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত সৌদি আরবে বিএনপির দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত এতিমদের সন্মানে প্রবাসী সাংবাদিক ফারুক চানের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দালালরা দিচ্ছে পুলিশ ভেরিফিকেশন!

হেফাজতের হরতালে সিদ্ধিরগঞ্জ রণক্ষেত্র পুলিশ সাংবাদিকসহ আহত আর্ধশতাধিক

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ মার্চ ২০২১
  • ১১৯ বার পড়া হয়েছে

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জে হেফাজত ইসলাম নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছে পুলিশসদস্যসহ কমপক্ষে ১০ জন। অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে পাঁচটি গাড়িতে। ভাংচুর করা হয় রোগীবাহী দুইটি এ্যাম্বোলেস ও র‌্যাব পুলিশের গাড়ি। হেফাজতের ডাকা সকাল সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে গতকাল রোবার বেলা ১২ টা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট শুরু হয় সংঘর্ষ। চলে দিনব্যপী।

প্রত্যক্ষদশীরা জানায়, হেফাজতে ইসলামের পূর্বঘোষিত হরতাল পালন করতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকার কওমী মাদ্রাসার হাজার হাজার ছাত্র শিক্ষক ফজরের নামাজের পর ভোর ৬ টা থেকে সাইনবোর্ড, সানারপাড়, মৌচাক, মাদানীনগর ও শিমরাইল মোড় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নেয়। টায়ার ও কাঠের স্তুপ করে আগুন ধরিয়ে দেয় মহাসড়কে কমপক্ষে ৩০ টি স্পডে। চলতে দেয়নি কোন যানবাহন। যানহীন ফাঁকা সড়কে লাঠি হাতে নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয় হরতাল পালনকারিরা। এতে বন্ধ হয়ে পড়ে মহাসড়কে সকল প্রকার যানচলাচল। চরম ভোগান্তিতে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী সাধরণ।

সকাল ৯ টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার মো: জায়েদুল আলমের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরা হারতাল পালনকারিদের মহাড়ক থেকে সড়ে যাওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও তারা কর্ণপাত করেননি। বরং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মুফতি বশির উল্লাহ প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করব। বাধা দিলে ভয়াবহ পরিণতি হবে। তবে শান্তিপূর্ণ হরতালের কথা বললেও তারা গাড়ি চলাচলে বাধা ও অগ্নিসংযোগ করে।

বেলা ১২ টার দিকে পুলিশ কঠোর হয়। হেফাজত নেতাকর্মীদের সরিয়ে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু করতে চাইলে হরতালকারিরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে পুলিশ ফাঁকা গুলিছুড়ে। এতে হেফাজতকর্মীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। তারা মাদানীনগর কওমী মাদ্রাসার সামনে মহাসড়কে একটি যাত্রীবাহী বাস, একটি ট্রাক, দুইটি কাভার্ডভ্যান ও একটি মাইক্রোবাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ছবি তুলতে গেলে অনেক গণমাধ্যম কর্মীদের মারধর, ক্যামেরা ভাংচুর করে হরতালকারিরা। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় হরতালসমর্থিতরা। দুপুরের পর থেকে হেফাজতের সঙ্গে যোগদেয় কিছু বিএনপি সমর্থিত কর্মীরা। ফলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে ইঠে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নমনীয় আচরণে হরতাল সমর্থিতদের তান্ডব বৃদ্ধি পেতে থাকলে র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে কমপক্ষে কয়েকশ রাউন্ড গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। দূপুর ও বিকেলের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, শিফকুল ইসলাম, শাকিল, শাহাদাত ও পুলিশ সদস্য এমদাদসহ কমপক্ষে ১০ জন। দুইজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তাৎক্ষণিক ভাবে অন্যান্য গুলিবিদ্ধদের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে পুলিশ হরতাল সমর্থিতদের ধাওয়া করলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে ৪ টার দিকে আবার তারা মহাসড়কে উঠে ৫ টি পয়েন্ড আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। তখণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা চলায়। দিনব্যপী সংঘর্ষে ১০ জন পুলিশ সদস্য, দুইজন সাংবাদিকসহ আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশতাধিক। বিকেল সাড়ে ৫ টায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছে।

এ বিষয়ে কোন কথা বলতে অনিহা প্রকাশ করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান।

ঘটনাস্থলে থাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহের পারভেজ চৌধুরী, বলেন, আমারা তাদের বারবার রাস্তা থেকে সরিয়ে দেই। কিন্তু তারা আবার রাস্তায় এসে গাড়িতে আগুন ও ভাংচুর করছে। দূপুরে হেফাজত নেতারা কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষনা দিয়ে চলে যাওয়ার পরও ছোট ছোট বাচ্চাদের সামনে রেখে অন্যএকটি মহল পুলিশের সঙ্গে মারামারি করে পরিস্থিতি খারাপ করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। কত রাউন্ড গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা হয়েছে এবিষয়ে তাৎক্ষণিক কোন মন্তব্য করেননি তিনি।

জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে কথা না বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

 

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

সৌদি আরবে “প্রবাসী নাশীদ ব্যান্ডের” উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

হেফাজতের হরতালে সিদ্ধিরগঞ্জ রণক্ষেত্র পুলিশ সাংবাদিকসহ আহত আর্ধশতাধিক

আপডেট সময় : ০৯:৩৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ মার্চ ২০২১

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জে হেফাজত ইসলাম নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছে পুলিশসদস্যসহ কমপক্ষে ১০ জন। অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে পাঁচটি গাড়িতে। ভাংচুর করা হয় রোগীবাহী দুইটি এ্যাম্বোলেস ও র‌্যাব পুলিশের গাড়ি। হেফাজতের ডাকা সকাল সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে গতকাল রোবার বেলা ১২ টা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট শুরু হয় সংঘর্ষ। চলে দিনব্যপী।

প্রত্যক্ষদশীরা জানায়, হেফাজতে ইসলামের পূর্বঘোষিত হরতাল পালন করতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকার কওমী মাদ্রাসার হাজার হাজার ছাত্র শিক্ষক ফজরের নামাজের পর ভোর ৬ টা থেকে সাইনবোর্ড, সানারপাড়, মৌচাক, মাদানীনগর ও শিমরাইল মোড় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নেয়। টায়ার ও কাঠের স্তুপ করে আগুন ধরিয়ে দেয় মহাসড়কে কমপক্ষে ৩০ টি স্পডে। চলতে দেয়নি কোন যানবাহন। যানহীন ফাঁকা সড়কে লাঠি হাতে নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয় হরতাল পালনকারিরা। এতে বন্ধ হয়ে পড়ে মহাসড়কে সকল প্রকার যানচলাচল। চরম ভোগান্তিতে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী সাধরণ।

সকাল ৯ টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার মো: জায়েদুল আলমের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরা হারতাল পালনকারিদের মহাড়ক থেকে সড়ে যাওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও তারা কর্ণপাত করেননি। বরং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মুফতি বশির উল্লাহ প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করব। বাধা দিলে ভয়াবহ পরিণতি হবে। তবে শান্তিপূর্ণ হরতালের কথা বললেও তারা গাড়ি চলাচলে বাধা ও অগ্নিসংযোগ করে।

বেলা ১২ টার দিকে পুলিশ কঠোর হয়। হেফাজত নেতাকর্মীদের সরিয়ে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু করতে চাইলে হরতালকারিরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে পুলিশ ফাঁকা গুলিছুড়ে। এতে হেফাজতকর্মীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। তারা মাদানীনগর কওমী মাদ্রাসার সামনে মহাসড়কে একটি যাত্রীবাহী বাস, একটি ট্রাক, দুইটি কাভার্ডভ্যান ও একটি মাইক্রোবাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ছবি তুলতে গেলে অনেক গণমাধ্যম কর্মীদের মারধর, ক্যামেরা ভাংচুর করে হরতালকারিরা। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় হরতালসমর্থিতরা। দুপুরের পর থেকে হেফাজতের সঙ্গে যোগদেয় কিছু বিএনপি সমর্থিত কর্মীরা। ফলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে ইঠে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নমনীয় আচরণে হরতাল সমর্থিতদের তান্ডব বৃদ্ধি পেতে থাকলে র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে কমপক্ষে কয়েকশ রাউন্ড গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। দূপুর ও বিকেলের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, শিফকুল ইসলাম, শাকিল, শাহাদাত ও পুলিশ সদস্য এমদাদসহ কমপক্ষে ১০ জন। দুইজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তাৎক্ষণিক ভাবে অন্যান্য গুলিবিদ্ধদের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে পুলিশ হরতাল সমর্থিতদের ধাওয়া করলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে ৪ টার দিকে আবার তারা মহাসড়কে উঠে ৫ টি পয়েন্ড আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। তখণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা চলায়। দিনব্যপী সংঘর্ষে ১০ জন পুলিশ সদস্য, দুইজন সাংবাদিকসহ আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশতাধিক। বিকেল সাড়ে ৫ টায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছে।

এ বিষয়ে কোন কথা বলতে অনিহা প্রকাশ করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান।

ঘটনাস্থলে থাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহের পারভেজ চৌধুরী, বলেন, আমারা তাদের বারবার রাস্তা থেকে সরিয়ে দেই। কিন্তু তারা আবার রাস্তায় এসে গাড়িতে আগুন ও ভাংচুর করছে। দূপুরে হেফাজত নেতারা কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষনা দিয়ে চলে যাওয়ার পরও ছোট ছোট বাচ্চাদের সামনে রেখে অন্যএকটি মহল পুলিশের সঙ্গে মারামারি করে পরিস্থিতি খারাপ করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। কত রাউন্ড গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা হয়েছে এবিষয়ে তাৎক্ষণিক কোন মন্তব্য করেননি তিনি।

জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে কথা না বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।