বন্দীরা পাবে লভ্যাংশের অর্থ : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জেলখানায় চালু হয়েছে গার্মেন্টস ইন্ডাষ্ট্রি । ২৭ ডিসেম্বর, বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের ভিতরে রিজিলিয়ান্স নামক গার্মেন্টস এর শুভ উদ্বোধন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল । একই সময় ছয় তলা বিশিষ্ট বন্দী ভবন ও ছয় তলা বিশিষ্ট সেল ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, কারাবন্দীদের ভবিষ্যত তৈরী করে দিতে আমরা কারাগারগুলোতে বিভিন্ন ধরণের কারিগরী প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি। দেশে প্রথম বারের মতো নারায়ণগঞ্জ কারাগারে বন্দীদের জন্য নির্মিত গার্মেন্টস ইন্ডাষ্ট্রি রিজিলিয়ান্স সবধরণের সুযোগ সম্বলিত।
এ গার্মেন্টস ইন্ডাষ্ট্রি থেকে উৎপাদিত পণ্য বাজারে জায়গা দখল করে নিবে। আমরা পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশের সবগুলো কারাগারে এ ধরণের ইউনিট গঠন করবো। সবগুলো কারাগারে বন্দীদের ভবিষ্যত গড়ার জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। কারাগারে যারা থাকেন সেসব বন্দীরা যাতে না ভাবেন যে সবকিছু থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। তাদের মানসিক প্রশান্তির জন্য আমরা কারাগার গুলোতে সবকিছুর ব্যবস্থা করছি। সেখানে বন্দিরা কাজ করে উপার্জন করতে পারবেন। লভ্যাংশের অর্ধেক অর্থ বন্দীদের প্রদান করা হবে।
কারাগারে মাদক নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, কারাগারে যাতে অবৈধ কিছু যাতে না ঢুকে সে জন্য আমরা একের পর এক ব্যবস্থা নিচ্ছি। কারারক্ষীদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিচ্ছি। কারাগারের ফটকগুলোতে আমার স্ক্যানার মেশিন স্থাপন করেছি। তবে এটা অস্বীকার করছি না এর ফাঁক ফোকর দিয়েও কয়েকটা জিনিস ঢুকে যায় আমরা সে দিকেও সতর্ক রয়েছি। নারায়ণগঞ্জ সফর কালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নবনির্মিত কনফারেন্স রুম এবং ফতুল্লার বিসিকে ফায়ার সার্ভিসের উদ্বোধন করেন।
জেল সুপারিনটেন্ডেন্ট সুভাষ দাস বলেছেন, নভেম্বর নাগাদ ওই জেলখানায় প্রায় ২১৫০ জন বন্দি রয়েছেন। তবে প্রাথমিকভাবে ওই কারখানায় কাজ করবেন প্রায় ৩০০ বন্দি।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির মতে, এই কারখানাটি চালানো হবে দুই শিফটে। এ জন্য ৩০০ থেকে ৪০০ বন্দিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকটারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টারস এসোসিয়েশনে। এখানে কাজ করে বন্দিরা যা উপার্জন করবেন তা তাদের সংশ্লিষ্ট একাউন্টে জমা হবে। এই অর্থ তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠাতে পারবেন অথবা জেলজীবনের শেষে পুরো অর্থ তুলে নিতে পারবেন।
তিনি বলেন, এই গার্মেন্ট কারখানাটি ৫০০০ বর্গফুট এলাকায় গড়ে উঠেছে। এতে সহায়তা করেছে জেলা প্রশাসন ও সমাজ কল্যাণ সংক্রান্ত বিভাগ। এই কারখানার জন্য আমদানি করে স্থাপন করা হয়েছে।
এ সময় মন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সুরক্ষা সেবা বিভাগ) ফরিদ উদ্দীন আহমদ চৌধুরী, কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন, জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, পুলিশ সুপার মঈনুল হক, গোলাম দস্তগীর গাজী (নারায়ণগঞ্জ-১) , নজরুল ইসলাম বাবু (নারায়ণগঞ্জ-২), একেএম শামীম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৪) সাংসদ একেএম সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫), জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই, পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন, আইনজীবী সমিতির সভাপতি আনিসুর রহমান দিপু, চেম্বার অব কর্মাস এর সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজলসহ জেলার উর্ধ্বতন কর্মকতা ও জনপ্রতিনিধিরা।