সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের তোপের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে অবসান ঘটেছে নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জের ভাইয়া লীগ সা¤্রাজ্যের। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একচেটিয়া শাসন ও শোষন করে যেসব নেতারা অর্থের পাহাড় গড়েছে, তারা জনরোষের ভয়ে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়েছে। আনাচে কানাচে চাঁদাবাজি, টে-ারবাজি, অন্যের জমি দখলসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে সাধারণ মানুষকে অতিষ্ট করে তোলা এসব নেতাদের পলায়নে স্বস্থির নি:শ্বাস ফেলছেন ভূক্তভোগীরা। অনেকই করছেন মিষ্টি বিতরণ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর সারাদেশের মত বদলে যায় সিদ্ধিরগঞ্জের চিত্র। আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। জনতার বাঁধভাঙ্গা উল্লাস চলাকালে দুর্বৃত্তরা আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি-ঘরে হামলা ভাঙচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। এমন পরিস্থিতিতে জনরোষের ভয়ে জীবন বাঁচাতে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পালিয়েছেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি, থানা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক শাহজালাল বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক নাসিক ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন, থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রাজুসহ ভাইয়া লীগের প্রধান সেনাপতিরা।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায় আসার পর থেকে দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ধরে সিদ্ধিরগঞ্জে চলছিল ভাইয়া লীগ বাহিনীর রাজত্ব। এলাকায় নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলে, পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি, কলকারখানা, পোশাক শিল্প, এমনটি বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন থেকে শুরু করে সরকারি দপ্তরের টে-ার পর্যন্ত নিয়ন্ত্রন করতেন তারা। তাদের ব্যক্তিগত অফিসকে বানিয়েছিল মিনি আদালত ও টর্চার সেল। তাদের আদালতের বিচার শুরু হত সন্ধ্যার পর। চাঁদা দিতে অস্বীকার, জমি দখলে অপত্তি করলেই তাদের ধরে নিয়ে টর্চার সেলে অমানবিক নির্যাতন করা হতো। দলীয় লোকও ছাড় পেতনা তাদের জুলুম অত্যাচার থেকে। তাদের মতের বাইরে গেলেই করা হত মিথ্যা মামলার আসামি। দলীয় সুবিধাভোগী ক্ষমতাধর এসব নেতারা পুলিশের সঙ্গে আঁতাত করে অন্তত অর্ধশতাধিক আওয়ামী লীগ সমর্তককেও নাশকতা মামলার আসামি করে জেল কাটিয়েছে। নিরীহ মানুষের উপর জুলুম অত্যাচার নীপিড়ন চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অবৈধ উপায়ে তারা বাড়ি-গাড়িসহ কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাদেকুর রহমান দু:খ প্রকাশ করে বলেন, সুবিধাভোগীরা আওয়ামী লীগের ব্যানারে ভাইয়া লীগ করে অর্থের কুমির হয়েছে। বিদেশে বাড়ি করেছে। এখন তারা পালিয়ে গেছে। বিপদে ফেলে গেছে আমাদের মতো নেতাকর্মীদের। তাদের পাপের খেসারত আমাদের দিতে হবে। আপাদত তৃণমূলের অনেক নেতা গা ঢাকা দিয়েছে। আমি নিজেও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি।