নারায়ণগঞ্জ ০৫:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সাংবাদিক শাওনের বাবা ফিরোজ আহমেদ আর নেই রিয়াদে জমকালো আয়োজনে মাই টিভির ১৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন রিয়াদে প্রিমিয়াম ফুটবল লীগের ফাইনাল অনুষ্ঠিত জুন মাসের ১৭ তারিখ কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভবনা রিয়াদে নোভ আল আম্মার ইষ্টাবলিস্ট এর আয়োজনে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত রিয়াদে বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত রিয়াদে জয়নাল আবেদীন ফারুক রিয়াদে বাংলাদেশ প্রবাসী সাংবাদিক ফোরামের ইফতার মাহফিলে প্রবাসীদের মিলন মেলা ফতুল্লা থানায় অভিযোগ করেও সাবেক সেনা পরিবার, পাশে পায়নি পুলিশ রিয়াদে প্রবাসী চাঁদপুর জেলা বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

বইছে শীতল হাওয়া-সোনারগাঁয়ে ব্যস্ত লেপ-তোষকের কারিগররা

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:০১:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ নভেম্বর ২০২১
  • ১১৯ বার পড়া হয়েছে

মাজহারুল রাসেল : কার্তিকের মাঝামাঝি সময়ে বইছে শীতল হাওয়া, ভোরের আকাশে ঘনকুয়াশায় যেন শীতের দেখা মিলছে। দিনের গরমের সঙ্গে সঙ্গে সন্ধ্যার শুরুতে পড়ছে কুয়াশার ফুলঝুরি। হেমন্তের দিনগুলো শেষ হতে না হতেই শীতের বুড়ি এসে যেন জবরদখল করে নিচ্ছে আশপাশের প্রকৃতি। দিনে গরম, রাতে কুয়াশার শীতল হাওয়া আর ভোর রাতে ঘন কুয়াশার হাতছানিই বলে দিচ্ছে শীত বেশ দুরে নয়। দিনের বেলা সূর্যের আলোর দেখা মিললেও দিন দিন তাপমাত্রা কমছে।

সকালে ঘাসের ডগায় আর বৃক্ষরাজির পাতায় পাতায় জমে থাকা শিশির বিন্দু জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। ভোর থেকে ঘন কুয়াশা আর বিকেলের হিমেল বাতাসে শীতের হাওয়া।এদিকে,উপজেলায় শীতকে সামনে রেখে উপজেলা প্রতিটি বাড়ি-বাড়ির ছুটে বেড়াচ্ছেন লেপ-তোষক কারিগররা। অনেকেই আগাম শীতের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আবার অনেকেই লেপ-তোষক তৈরি করতে শুরু করেছেন।

উপজেলায় শীতের আগমনীবার্তা আসার সঙ্গে সঙ্গে ধুনারীদের তুলা ছাঁটাই ও লেপ তৈরির কাজে কর্মচাঞ্চল্য বেড়েছে। কয়েক দিন ধরে এ উপজেলায় শীত ও কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। ভোরবেলায় কুয়াশায় ঢেকে যায় সবুজ মাঠ।

সামনে পৌষ ও মাঘ মাস শীতকাল। তাই গ্রামাঞ্চলের মানুষ আগে ভাগেই লেপ, তোষক বানাতে শুরু করেছে। তাই লেপ, তোষক কারিগরদের এখন দম ফেলার সময় নেই। বিরামহীনভাবে কাজ করছেন তারা। কেউ কেউ পুরনো লেপ ভেঙে নতুন করে বানিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ নতুন তুলা দিয়ে তৈরি করে নিচ্ছে লেপ, তোষক ও বালিশ।

এদিকে, শীতকে সামনে রেখে অনেকেই যারা পুরনো শীত বস্ত্র তুলে রেখেছেন সেগুলো বের করছেন। কেউ কেউ আবার নতুন করে লেপ-তোষক তৈরি করছেন।

লেপ-তোষকের কারিগরদের ব্যস্ততাই মনে করিয়ে দিচ্ছে শীতকাল বেশী দূরে নয়। বিত্তবানদের যেখানে বাহারি ডিজাইনের শীতের কাপড়ের সমারোহ থাকে, সেখানে নিম্ন-শ্রেণীর অনেকের ভাগ্যে হয়তো একটি কাপড়ও জোটে না।

আর তাই নিম্ন-শ্রেণীর নারীরা বেশ আগে-ভাগেই সংসারের কাজের ফাঁকে পুরনো শীতের কাঁথাগুলো নতুন করে ছেঁড়া শাড়ী-লুঙ্গি দিয়ে জোড়া তালি লাগিয়ে ব্যবহারের উপযোগি করার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

অপরদিকে, দিন যত গড়াচ্ছে শীতের প্রকোপ ততই বেশি বাড়ার আশংকায় উপজেলার প্রায় সর্বত্রই কারিগররা নতুন লেপ-তোষক তৈরি করছেন। এর মধ্য রয়েছেন মৌসুমী কারিগররাও।

বছরের অন্যান্য সময় বেচাকেনা কম হলেও শীত মৌসুমে এসবের বিক্রি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। উপজেলার বাজারে কম্বলের তুলনায় লেপের দাম কম হওয়ায় চাহিদা বেশি।

তুলা পিটিয়ে তা রং বেরঙের কাপড়ের তৈরি লেপ-তোষকের কাভারে মুড়িয়ে সুই-সুতার ফোড়ে তৈরি করা হয় লেপ। খুব দ্রুত শীত নিবারণে উপযোগী এটি। শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোষক তৈরি ও বিক্রি হয় বেশি।

উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তার হাবিবপুর কবরস্থান সংলগ্ন মজিদ টাওয়ারে অবস্থিত বিসমিল্লাহ বেডিং ষ্টোরের মালিক মোঃ নবীর হোসেন জানান, তার দোকানের কারিগররা এখন দিন-রাত পরিশ্রম করে লেপ-তোষক তৈরি করছেন। বেশ কিছু অর্ডার আছে। প্রতিদিনই আরও নতুন বেশ অর্ডার আসে। তাছাড়া তৈরি করা লেপ-তোষক কিনতেও প্রতিদিন ভিড় করেন ক্রেতারা।

লেপ-তোষকের কারিগর ও দোকানের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে অর্ডার নিলেও যথাসময়ে ডেলিভারি দিতে হিমশিম খাচ্ছে কারিগররা। এবার তুলার দাম একটু বেশি। কালার তুলা প্রতি কেজি ৫৫ টাকা, মিশালী তুলা ৫০ টাকা, সিম্পল তুলা ৯০ টাকা, শিমুল তুলা ভালো টা ৬৫০ টাকা থেকে ৭৫০ ও সাদা তুলা ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানান, প্রতিদিন একজন কারিগর ৬ থেকে ৮ টি লেপ তৈরি করেন। মাঝারি ধরনের একটি লেপ বানাতে খরচ হয় দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। তোষক বানাতে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়। তবে তুলার প্রকারভেদে লেপতোষকের দাম কমবেশি হয়। এছাড়া দিনদিন জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় লেপের দাম বেড়ে গেছে।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

সাংবাদিক শাওনের বাবা ফিরোজ আহমেদ আর নেই

বইছে শীতল হাওয়া-সোনারগাঁয়ে ব্যস্ত লেপ-তোষকের কারিগররা

আপডেট সময় : ০২:০১:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ নভেম্বর ২০২১

মাজহারুল রাসেল : কার্তিকের মাঝামাঝি সময়ে বইছে শীতল হাওয়া, ভোরের আকাশে ঘনকুয়াশায় যেন শীতের দেখা মিলছে। দিনের গরমের সঙ্গে সঙ্গে সন্ধ্যার শুরুতে পড়ছে কুয়াশার ফুলঝুরি। হেমন্তের দিনগুলো শেষ হতে না হতেই শীতের বুড়ি এসে যেন জবরদখল করে নিচ্ছে আশপাশের প্রকৃতি। দিনে গরম, রাতে কুয়াশার শীতল হাওয়া আর ভোর রাতে ঘন কুয়াশার হাতছানিই বলে দিচ্ছে শীত বেশ দুরে নয়। দিনের বেলা সূর্যের আলোর দেখা মিললেও দিন দিন তাপমাত্রা কমছে।

সকালে ঘাসের ডগায় আর বৃক্ষরাজির পাতায় পাতায় জমে থাকা শিশির বিন্দু জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। ভোর থেকে ঘন কুয়াশা আর বিকেলের হিমেল বাতাসে শীতের হাওয়া।এদিকে,উপজেলায় শীতকে সামনে রেখে উপজেলা প্রতিটি বাড়ি-বাড়ির ছুটে বেড়াচ্ছেন লেপ-তোষক কারিগররা। অনেকেই আগাম শীতের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আবার অনেকেই লেপ-তোষক তৈরি করতে শুরু করেছেন।

উপজেলায় শীতের আগমনীবার্তা আসার সঙ্গে সঙ্গে ধুনারীদের তুলা ছাঁটাই ও লেপ তৈরির কাজে কর্মচাঞ্চল্য বেড়েছে। কয়েক দিন ধরে এ উপজেলায় শীত ও কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। ভোরবেলায় কুয়াশায় ঢেকে যায় সবুজ মাঠ।

সামনে পৌষ ও মাঘ মাস শীতকাল। তাই গ্রামাঞ্চলের মানুষ আগে ভাগেই লেপ, তোষক বানাতে শুরু করেছে। তাই লেপ, তোষক কারিগরদের এখন দম ফেলার সময় নেই। বিরামহীনভাবে কাজ করছেন তারা। কেউ কেউ পুরনো লেপ ভেঙে নতুন করে বানিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ নতুন তুলা দিয়ে তৈরি করে নিচ্ছে লেপ, তোষক ও বালিশ।

এদিকে, শীতকে সামনে রেখে অনেকেই যারা পুরনো শীত বস্ত্র তুলে রেখেছেন সেগুলো বের করছেন। কেউ কেউ আবার নতুন করে লেপ-তোষক তৈরি করছেন।

লেপ-তোষকের কারিগরদের ব্যস্ততাই মনে করিয়ে দিচ্ছে শীতকাল বেশী দূরে নয়। বিত্তবানদের যেখানে বাহারি ডিজাইনের শীতের কাপড়ের সমারোহ থাকে, সেখানে নিম্ন-শ্রেণীর অনেকের ভাগ্যে হয়তো একটি কাপড়ও জোটে না।

আর তাই নিম্ন-শ্রেণীর নারীরা বেশ আগে-ভাগেই সংসারের কাজের ফাঁকে পুরনো শীতের কাঁথাগুলো নতুন করে ছেঁড়া শাড়ী-লুঙ্গি দিয়ে জোড়া তালি লাগিয়ে ব্যবহারের উপযোগি করার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

অপরদিকে, দিন যত গড়াচ্ছে শীতের প্রকোপ ততই বেশি বাড়ার আশংকায় উপজেলার প্রায় সর্বত্রই কারিগররা নতুন লেপ-তোষক তৈরি করছেন। এর মধ্য রয়েছেন মৌসুমী কারিগররাও।

বছরের অন্যান্য সময় বেচাকেনা কম হলেও শীত মৌসুমে এসবের বিক্রি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। উপজেলার বাজারে কম্বলের তুলনায় লেপের দাম কম হওয়ায় চাহিদা বেশি।

তুলা পিটিয়ে তা রং বেরঙের কাপড়ের তৈরি লেপ-তোষকের কাভারে মুড়িয়ে সুই-সুতার ফোড়ে তৈরি করা হয় লেপ। খুব দ্রুত শীত নিবারণে উপযোগী এটি। শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোষক তৈরি ও বিক্রি হয় বেশি।

উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তার হাবিবপুর কবরস্থান সংলগ্ন মজিদ টাওয়ারে অবস্থিত বিসমিল্লাহ বেডিং ষ্টোরের মালিক মোঃ নবীর হোসেন জানান, তার দোকানের কারিগররা এখন দিন-রাত পরিশ্রম করে লেপ-তোষক তৈরি করছেন। বেশ কিছু অর্ডার আছে। প্রতিদিনই আরও নতুন বেশ অর্ডার আসে। তাছাড়া তৈরি করা লেপ-তোষক কিনতেও প্রতিদিন ভিড় করেন ক্রেতারা।

লেপ-তোষকের কারিগর ও দোকানের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে অর্ডার নিলেও যথাসময়ে ডেলিভারি দিতে হিমশিম খাচ্ছে কারিগররা। এবার তুলার দাম একটু বেশি। কালার তুলা প্রতি কেজি ৫৫ টাকা, মিশালী তুলা ৫০ টাকা, সিম্পল তুলা ৯০ টাকা, শিমুল তুলা ভালো টা ৬৫০ টাকা থেকে ৭৫০ ও সাদা তুলা ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানান, প্রতিদিন একজন কারিগর ৬ থেকে ৮ টি লেপ তৈরি করেন। মাঝারি ধরনের একটি লেপ বানাতে খরচ হয় দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। তোষক বানাতে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়। তবে তুলার প্রকারভেদে লেপতোষকের দাম কমবেশি হয়। এছাড়া দিনদিন জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় লেপের দাম বেড়ে গেছে।