ফতুল্লা প্রতিনিধি : ফতুল্লায় ভাল বাসার সম্পর্কে বিয়ে করার দুই মাসের মাথায় এক লাখ ৩৩ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তারের সাথে স্পৃষ্ট হয়ে দগ্ধ হয়ে নব-দম্পতি মারা গেছে। দগ্ধ হওয়ার তিনদিনের মাথায় বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারী) ভোর চারটার দিকে স্বামী মাহাবুল ইসলাম (২৫) ও সকাল ৬টার দিকে স্ত্রী রুনিয়া আক্তার (২০) মারা যায়। স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুর সংবাদে দুই পরিবারের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীনরত অবস্থায় তারা মারা যায়।
নিহতরা হলো, মাহাবুল ইসলাম ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার গোপপুর এলাকার আবুল কালামের ছেলে ও তার স্ত্রী রুনিয়া আক্তার খাদিজা। তারা ফতুল্লার শাসনগাও এলাকার মিজানুর রহমানের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করে। তারা দুইজনই বিসিক শিল্পনগরীর গার্মেন্টে চাকরী করতো।
এরআগে সোমবার (১৩ জানুয়ারী) দুপুরে ফতুল্লার শাসনগাও এলাকার ওহাব সরদারের বিল্ডিংয়ের ছাদে কাপড় শুকাতে যায় রুনিয়া আক্তার খাদিজা। সে ছাদে উঠার সাথে সাথে সেই বিল্ডিংয়ের উপর দিয়ে যাওয়া এক লাখ ৩৩ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তার চুম্বকের মত টেনে নেয় এবং রুনিয়া বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে শরীর জ্বলছে যায়। এসময় রুনিয়ার শরীরের জামায় আগুন ধরে যায় এবং সেই আগুন নিচে পড়ে দুইটি ঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আর রুনিয়ার চিৎকারে তার স্বামী মাহাবুল ইসলাম তাকে বাঁচাতে দ্রæত সেই ছাদে উঠে এবং তাকে কোলে করে নিচে নামার সময় সেই শক্তিশালী বিদ্যুতের তারে তাকেও টেনে নেয় এবং সেও দগ্ধ হয়। স্বামী স্ত্রী দুইজনই দগ্ধ হয়ে ছাদে পড়ে থাকলে ফতুল্লার বিসিক ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদেরকে উদ্ধার করে তাদের নিজস্ব এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের বার্ন ইউনিটি ভর্তি করে।
নিহত মাহাবুল ইসলামের মামা আলিম উদ্দিন নব-দম্পতির মৃত্যুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তার ভাগিনা মাহাবুল ইসলাম বিসিকের একটি গার্মেন্টে চাকরী করতো। আর রুনিয়া আক্তারও একই এলাকার একটি গার্মেন্টে চাকরী করতো। সেই সুবাধে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত দুই মাসে আগে বাবা মায়ের অবাধ্য হয়ে তারা বিয়ে করে সুখের সংসার বাধে এবং শাসনগাও এলাকার মিজানুর রহমানের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস শুরু করে। তাদের বিয়েটি পরিবার মেনে নেয়নি। আনুমানিক ১৫ দিন হয় মাহাবুল ইসলামের পরিবার তাদের বিয়ে মেনে নেয় এবং তাদের সাথে যোগাযোগ শুরু করে। কিন্তু বিয়ের দুই মাসের মাথায় বৈদ্যুতিক তারের সাথে স্পৃষ্ট হয়ে দগ্ধ হয় এবং তিনদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, বিদ্যুত স্পৃষ্ট হয়ে স্বামী স্ত্রী দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। কিন্তু মারা গেছে কিনা পরিবারের পক্ষ হতে কেউ অবগত করেনি। তার পরও আমরা খোঁজ খবর নিয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো।