স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইরে মাদক সন্ত্রাসীরা আগুনে পড়িয়ে হত্যা করেছে সুমন (৩২) নামে অপর এক মাদক ব্যবসায়ীকে। পাওনা টাকা চাইতে গিলে প্রথমে তাকে পিটিয়ে আহত করে পরে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় মাদক সন্ত্রাসীরা। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টায় ফতুল্লা থানার মাসদাইর পাকাপুল এলাকার সুরুজ্জামালের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত সুমনকে মুমুর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধিন অবস্থায় শনিবার ভোর ৫ টায় সে মারা যায়। নিহত সুমন মাসদাইর এলাকার জলিল মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, মাসদাইর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা সুমন একজন পাইকারী মাদক বিক্রেতা। সে বিভিন্ন খুচরা মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে মাদক সরবরাহ করে। মাসদাইর পাকাপুল এলাকার সুরুজ্জামালের বাড়ির ভাড়াটিয়া বিপ্লব খুচরা মাদক বিক্রেতা। তার কাছে সুমন মাদক বিক্রির ৭০ হাজার টাকা পায়। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় সুমন মাদকের পাওনা টাকা আনতে বিপ্লবের কাছে যায়। এসময় দুজনের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে বিপ্লব ও তার সহযোগীরা সুমনের উপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে আহত করে।পরে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়। তখন এলাকাবাসী সুমনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেছিল।
নিহত সুমনের পরিবার জানায়, প্রতিবেশী সোহেল মন্ডল ও বিপ্লবের কাছে ৭০ হাজার করে টাকা পাওনা ছিল সুমনের। কোরবানি ঈদের সময় সুমনের কাছে পাওনা পরিশোধের জন্য বিপ্লব ও সোহেল এক সপ্তাহ সময় চায়। শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টায় একটি ফোন পেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায় সুমন। যাওয়ার সময় তার মাকে জানিয়ে যায় পাওনা টাকা আনতে বিপ্লবের কাছে যাচ্ছে । তার কিছুক্ষণ পরেই সুমনের পরিবার জানতে পারে সুমনের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। মৃত্যুর আগে সুমন তার পরিবারের সদস্যদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে বলে জানা গেছে। সুমনের বোন রীতা জানায়, সুমনের দেয়া বর্ণনা মতে এই হত্যার সাথে ৪ জন জড়িত। তারা হলো, বিপ্লব, তার স্ত্রী শায়লা, সুমন মন্ডল ও হোটেল মাসুদ। সুমন তার পাওনা টাকা আনতে গেলে শায়লা, মাসুদ ও বিপ্লব তাকে আটক করে। পরে বিপ্লব সুমনের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়। ঘটনার পর থেকেই এই চারজন পলাতক রয়েছে বলেও জানায় রীতা।
ফতুল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মঞ্জুর কাদের জানান, সুমন বিপ্লব নামে এক মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে শুক্রবার রাতে মারামারি হয়েছে। আগুনে ঝলসে যাওয়া সুমনকে রাতেই ঢাক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার ভোরে সে মারা যায়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নারায়ণগঞ্জে আসার পর মামলা নেয়া হবে।