বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকায় ‘ক্যাপ্টেন খান’ ছবির শুটিংয়ের যাওয়ার পথে মতিঝিল শাপলা চত্বরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা হয় শাকিব খানের। অভিনেতা নিজেই খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষার্থীদের সাথে রাস্তায় নেমে আন্দোলনে শরিক হতে চেয়ে ছিলেন অভিনেতা শাকিব খান। কিন্তু পরনে শুটিংয়ের কস্টিউম থাকায় সে ইচ্ছে আর পূরণ হয়নি। তবে বেশ কিছুক্ষণ তিনি গাড়িতে বসেই ছাত্রদের সাথে কথা বলে আন্দোলন চালিয়ে যেতে উৎসাহ দিয়েছেন। এ সম্পর্কে শাকিব খান বলেন, ‘পরনে শুটিংয়ের কস্টিউম না থাকলে শিক্ষার্থীদের সাথে রাস্তায় নেমে যেতাম। এত সুশৃঙ্খল ও সুন্দর আন্দোলন দেখে বারবার তেমনটাই মনে হচ্ছিল।’
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টি শাকিব খান শুরু থেকে অবগত ছিলেন। আন্দোলনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়ার প্রতি তার সমর্থনও ছিল। আজ শুটিংয়ের যাওয়ার ফাঁকে সেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার দেখাও হয়েছে, কথাও হয়েছে। শাকিব খান বলেন, ‘বেলা ১১টার দিকে মতিঝিল শাপলা চত্বরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দেখে গাড়ি থামাই। গাড়ির সামনের আসনে বসা ছিলাম আমি। এরপর শিক্ষার্থীরা আমাকে দেখে ছুটে আসে৷ গাড়ির জানালা খুলে দিই। শিক্ষার্থীরা ছুটে এসে আমাকে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানায়। কিন্তু রাস্তায় নামতে না পারলেও তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক আন্দোলনে আমার সমর্থনের কথা জানিয়ে দিই।’
শুটিংয়ের পোশাক পরে শাকিব আজ বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। তাই গাড়ি থেকে নামতে পারেননি। বললেন, ‘বেশ কিছুক্ষণ ধরে গাড়িতে বসেই শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলি। তখন বৃষ্টি হচ্ছিল, এই বৃষ্টির মধ্যেও শিক্ষার্থীরা সরে যায়নি। বৃষ্টির মধ্যে ভিজে তারা শান্তিপূর্ণভাবে যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করছে। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে, যেটা বড়দের করার কথা ছিল। ওরা দেখিয়ে দিয়েছে, কীভাবে আন্দোলন করতে হয়। নতুন সংজ্ঞা শিখলাম। সবাইকে যেভাবে সচেতন করার চেষ্টা করছে, এটা আমি সমর্থন না করে পারিনি।’
বাংলাদেশের পরিবহন খাতের অরাজকতার কারণে রাজধানীবাসী কেউ নিরাপদ না। শাকিবের কথায়, ‘আজকে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে রাস্তায় আন্দোলন করছে। সরকারের যেসব প্রতিষ্ঠানের ফিটনেসবিহীন গাড়ি দেখার কথা ছিল, তারা এত দিন কিছুই করেনি। আমি এই আন্দোলনের সাথে আছি। যদি প্রয়োজন হয়, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাস্তায়ও নামব। এই আন্দোলন কিন্তু সরকারের বিরুদ্ধে না, অনিয়মের বিরুদ্ধে। আমার মতে, প্রতিটি মানুষেরই নিয়ম মেনে চলতে চায়, রাস্তায় অকালমৃত্যুর সমাধান চাই, নিরাপদে বাড়ি ফিরতে চাই। এই আন্দোলন বাংলাদেশের প্রতিটি সচেতন মানুষের।’
ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে গত রোববার জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা। ওই দিন থেকে বেপরোয়া গাড়ির চালকের ফাঁসির দাবি এবং এ শাস্তি সংবিধানে সংযোজন করা, সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি না চলা, নিরাপদ সড়কের দাবি, সারা দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করা, নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের ক্ষমা চাওয়াসহ কয়েক দফা দাবিতে টানা পাঁচ দিন ধরে ঢাকায় ছাত্র বিক্ষোভ করছে। রাজধানীর শিক্ষার্থীদের এ দাবি পরে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।