অনলাইন ডেস্ক : বাল্যবিয়ে, অল্প বয়সের মা হওয়াসহ ঘন ঘন সন্তান ধারণ করা জরায়ুমুখ ক্যান্সার সৃষ্টির ঝুঁকি বাড়ায়। এ রোগের জীবাণু দীর্ঘ সময় সুপ্ত অবস্থায় থাকায় আক্রান্ত নারীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে এবং সেই থেকে ক্যান্সারটি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই সবার আগে বাল্যবিয়ে রোধ করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে সবাইকে টিকার আওতায় আনতে হবে। টিকা সহজলভ্য করে প্রান্তিক নারীদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
দেশব্যাপী চলছে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের মাস। এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার ইনসেপ্টার সহযোগিতায় আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে আয়োজিত সেমিনারে গাইনি বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। এর আগে ক্যান্সার প্রতিরোধে শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকরা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। এর পর গণটিকা কর্মসূচির আওতায় জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধী ‘প্যাপিলোভ্যাক্স’ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।
দেশে ক্যান্সারে নারী মৃত্যুর মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার দ্বিতীয় প্রধান কারণ। প্রতিবছর দেশে ১১ হাজারের বেশি নারী এ রোগে মারা যান এবং ৫ কোটিরও বেশি নারী এর ঝুঁকিতে আছেন। ৯ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত সব সুস্থ নারীকে টিকা দিলে দেশকে জরায়ুমুখ ক্যান্সার নির্মূলের পথে অনেকটা এগিয়ে নেওয়া যাবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. শেহরিন এফ সিদ্দিকা। তিনি বলেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সার নারী মৃত্যুর অন্যতম কারণ। সময় এসেছে এই মৃত্যু প্রতিরোধের। এজন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন গণসচেতনতা তৈরি ও স্ট্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা সবার কাছে নিয়ে যাওয়া।
জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক পারভীন শাহীনা রহমান বলেন, আগে সার্জিক্যাল ট্রিটমেন্ট ছিল। এখন ক্যান্সারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি, রেডিও থেরাপিও যোগ হয়েছে। কিন্তু জরায়ুমুখ ক্যান্সারের প্রাথমিক চিকিৎসায় টেস্টের সংখ্যা বাড়ছে না। একদম শেষ পর্যায়ে রোগীরা আসছেন। এর প্রধান কারণ অসেচতনতা ও জ্ঞানের অভাব।
হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. হাবিবুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ক্যান্সার আক্রমণ করে না এমন কোনো জায়গা নেই। তবে একমাত্র জরায়ুমুখ ক্যান্সারই সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব। সামান্য খেয়াল করলেই এ রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এখলাসুর রহমান, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. হাবিবুজ্জামান চৌধুরী, গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. শেহরিন এফ সিদ্দিকা, অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম, অধ্যাপক ডা. আবদুস সালাম আরিফ, অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. জাকিয়া শহীদ, অধ্যাপক ডা. মৌসুমী সেন প্রমুখ।