নারায়ণগঞ্জ ০৮:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রিয়াদে প্রবাসী চাঁদপুর জেলা বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত সৌদি আরবে “প্রবাসী নাশীদ ব্যান্ডের” উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি প্রেসক্লাবের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্টিত রিয়াদে সিলেট সদর উপজেলা প্রবাসীদের উদ্যোগে সংবর্ধণা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ইনভেস্টার নজরুল ইসলামের রিয়াদ গালফ টুলেডো রেষ্টুরেন্টে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত রূপগঞ্জে ৬ দিনেও নিখোঁজ ব্যবসায়ীর সন্ধান মেলেনি রিয়াদে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত সৌদি আরবে ব্যাচ ৯৫-৯৭ এর আয়োজনে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত সৌদি আরবে বিএনপির দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত এতিমদের সন্মানে প্রবাসী সাংবাদিক ফারুক চানের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

হৃদরোগে মৃত্যু ৮০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগীর

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৪৯:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২২
  • ১৮১ বার পড়া হয়েছে

হেলথ্ কর্ণার : দেশে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের নারী-পুরুষ এখন এই নীরব ঘাতকে আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়াবেটিস শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে আক্রমণ করে ডেকে আনে জটিল রোগ। ৮০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী হৃদরোগে মারা যায়। তাই সুস্থ থাকতে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এ পরিস্থিতির মধ্যে ‘ডায়াবেটিস সেবার প্রাপ্যতা’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতি, স্বাস্থ্য অধিদফতরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এনসিডিসি), বিভিন্ন হাসপাতাল এবং সেবা সংস্থা সচেতনতামূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্ড্রোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, ‘৭০ শতাংশের বেশি ডায়াবেটিস রোগীর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকার কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক, প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। ডায়াবেটিস রোগীর ৮০ শতাংশ মারা যায় হার্ট অ্যাটাকে। ডায়াবেটিস না থাকলে কিডনি রোগী অনেক কমে যেত।’ তিনি আরও বলেন, ‘ডায়াবেটিসের কারণে চিকিৎসা ব্যয়ও অনেক বেড়ে যায়। ৬১ শতাংশ মানুষ যারা মনে করে তাদের ডায়াবেটিস নাই কিন্তু টেস্ট করলে দেখা যায় তাদের ডায়াবেটিসের মাত্রা এত বেশি যে ওষুধ বা ইনসুলিন শুরু করতে হয়। ডায়াবেটিস থেকে অন্য রোগ হওয়ার কারণে খরচ আরও বেড়ে যায়। ডায়াবেটিসে ব্যক্তির পাশাপাশি সরকারের ব্যয়ও বাড়ছে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতের মোট ব্যয়ের ১০ শতাংশ ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যয় হয়। সে কারণে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গুরুত্ব দিতে হবে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও লাইফস্টাইল জরুরি। কামরাঙ্গা বাদে টক জাতীয় ফল নিয়মিত খাওয়া, শর্করা কম খাওয়া, ঠিকমতো প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া, শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে, নিয়মিত হাঁটতে হবে।’

দেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা। বর্তমানে দেশের ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। এই রোগীদের ৭০ শতাংশের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের কিডনি, চোখের রোগ, হৃদরোগসহ আরও বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ বাড়ছে। এতে শারীরিক ক্ষতির পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যয়ও বাড়ছে। ৬ দশমিক ৫ শতাংশের নিচে থাকলে বলা হয় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক ডায়াবেটিস রোগীর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে।

চিকিৎসকরা বলছেন, স্থূলতা, শারীরিক পরিশ্রম কমে যাওয়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া এবং তামাক ব্যবহারের কারণে দেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকায় হার্ট ও কিডনির রোগও বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইন ডিরেক্টর (অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, ‘ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসায় টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৫ হাজার রোগীকে বিনামূল্যে ইনসুলিন দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ ছাড়া টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের দেশের ২০০টি এনসিডি কর্নারে বিনামূল্যে ডায়াবেটিসের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। আগামীতে সারা দেশের প্রতিটিতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনসিডি কর্নার করা হবে এবং সেখানে বিনামূল্যে ডায়াবেটিসের ওষুধ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।’ বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি এবং জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, ‘ডায়াবেটিস শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গে আক্রমণ করে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। এতে ব্রেইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দৃষ্টিশক্তি কমে যায় ডায়াবেটিস আক্রান্ত হলে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত হলে যৌন দুর্বলতা দেখা দেয়, কিডনি রোগ হয়, পায়ে পচনশীল ঘা হতে পারে। এই ঘায়ের কারণে পা কেটে ফেলায় পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয় অনেক রোগীকে। ডায়াবেটিস রোগীরা হৃদরোগের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘টাইপ-২ ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য। তাই হাঁটতে হবে, মুটিয়ে যাওয়া যাবে না, কোমল পানীয়-ফাস্টফুড খাওয়া বন্ধ করতে হবে, দুশ্চিন্তা করা যাবে না। ডায়াবেটিস যাতে না হয় সেভাবে জীবনযাপন করতে হবে, আর যদি কেউ আক্রান্ত হয়ে যায় তাহলে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কার্ডিওলজি অধ্যাপক এস এম মুস্তফা জামান বলেন, ‘আমরা এক গবেষণায় দেখেছি ৭০ শতাংশ ডায়াবেটিসের রোগী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ এ দুটো পরস্পরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। যে বিষয়গুলো ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত, যেমন- অতি ওজন, ধূমপান, মন্দ খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা বা বংশগতি। এগুলো হৃদরোগেরও ঝুঁকি। তাই এ দুটো সমস্যা পরস্পরের হাত ধরেই চলে। একটির ঝুঁঁকি কমালে অপরটির ঝুঁঁকিও কমে আসে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ডায়াবেটিসের কারণে অপেক্ষাকৃত কম বয়সী মানুষের হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। ৩৫ বছরের নিচে অনেক তরুণ হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাদের অধিকাংশ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের একটি বড় অংশ হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাওয়ার আগমুহূর্ত পর্যন্ত বুঝতেই পারে না যে তার কোনো হৃদরোগ আছে। এর কারণ হলো ডায়াবেটিস আমাদের স্নায়ুবিক অনুভূতিকে ভোঁতা করে দেয়। যার ফলে অন্যদের মতো হৃৎপিন্ডে সমস্যা হলে বুকে ব্যথা বা চাপ লাগা, ঘাম অথবা পরিচিত উপসর্গগুলো তাদের প্রায়ই হয় না। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় সাইলেন্ট মায়োকার্ডিয়াল ইনরফার্কশন বা নীরব হার্ট অ্যাটাক। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে পারলে অনেক জটিল রোগের হাত থেকে মুক্তি মিলবে।’

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

রিয়াদে প্রবাসী চাঁদপুর জেলা বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

হৃদরোগে মৃত্যু ৮০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগীর

আপডেট সময় : ০১:৪৯:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২২

হেলথ্ কর্ণার : দেশে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের নারী-পুরুষ এখন এই নীরব ঘাতকে আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়াবেটিস শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে আক্রমণ করে ডেকে আনে জটিল রোগ। ৮০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী হৃদরোগে মারা যায়। তাই সুস্থ থাকতে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এ পরিস্থিতির মধ্যে ‘ডায়াবেটিস সেবার প্রাপ্যতা’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতি, স্বাস্থ্য অধিদফতরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এনসিডিসি), বিভিন্ন হাসপাতাল এবং সেবা সংস্থা সচেতনতামূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্ড্রোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, ‘৭০ শতাংশের বেশি ডায়াবেটিস রোগীর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকার কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক, প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। ডায়াবেটিস রোগীর ৮০ শতাংশ মারা যায় হার্ট অ্যাটাকে। ডায়াবেটিস না থাকলে কিডনি রোগী অনেক কমে যেত।’ তিনি আরও বলেন, ‘ডায়াবেটিসের কারণে চিকিৎসা ব্যয়ও অনেক বেড়ে যায়। ৬১ শতাংশ মানুষ যারা মনে করে তাদের ডায়াবেটিস নাই কিন্তু টেস্ট করলে দেখা যায় তাদের ডায়াবেটিসের মাত্রা এত বেশি যে ওষুধ বা ইনসুলিন শুরু করতে হয়। ডায়াবেটিস থেকে অন্য রোগ হওয়ার কারণে খরচ আরও বেড়ে যায়। ডায়াবেটিসে ব্যক্তির পাশাপাশি সরকারের ব্যয়ও বাড়ছে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতের মোট ব্যয়ের ১০ শতাংশ ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যয় হয়। সে কারণে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গুরুত্ব দিতে হবে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও লাইফস্টাইল জরুরি। কামরাঙ্গা বাদে টক জাতীয় ফল নিয়মিত খাওয়া, শর্করা কম খাওয়া, ঠিকমতো প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া, শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে, নিয়মিত হাঁটতে হবে।’

দেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা। বর্তমানে দেশের ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। এই রোগীদের ৭০ শতাংশের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের কিডনি, চোখের রোগ, হৃদরোগসহ আরও বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ বাড়ছে। এতে শারীরিক ক্ষতির পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যয়ও বাড়ছে। ৬ দশমিক ৫ শতাংশের নিচে থাকলে বলা হয় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক ডায়াবেটিস রোগীর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে।

চিকিৎসকরা বলছেন, স্থূলতা, শারীরিক পরিশ্রম কমে যাওয়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া এবং তামাক ব্যবহারের কারণে দেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকায় হার্ট ও কিডনির রোগও বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইন ডিরেক্টর (অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, ‘ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসায় টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৫ হাজার রোগীকে বিনামূল্যে ইনসুলিন দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ ছাড়া টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের দেশের ২০০টি এনসিডি কর্নারে বিনামূল্যে ডায়াবেটিসের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। আগামীতে সারা দেশের প্রতিটিতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনসিডি কর্নার করা হবে এবং সেখানে বিনামূল্যে ডায়াবেটিসের ওষুধ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।’ বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি এবং জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, ‘ডায়াবেটিস শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গে আক্রমণ করে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। এতে ব্রেইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দৃষ্টিশক্তি কমে যায় ডায়াবেটিস আক্রান্ত হলে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত হলে যৌন দুর্বলতা দেখা দেয়, কিডনি রোগ হয়, পায়ে পচনশীল ঘা হতে পারে। এই ঘায়ের কারণে পা কেটে ফেলায় পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয় অনেক রোগীকে। ডায়াবেটিস রোগীরা হৃদরোগের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘টাইপ-২ ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য। তাই হাঁটতে হবে, মুটিয়ে যাওয়া যাবে না, কোমল পানীয়-ফাস্টফুড খাওয়া বন্ধ করতে হবে, দুশ্চিন্তা করা যাবে না। ডায়াবেটিস যাতে না হয় সেভাবে জীবনযাপন করতে হবে, আর যদি কেউ আক্রান্ত হয়ে যায় তাহলে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কার্ডিওলজি অধ্যাপক এস এম মুস্তফা জামান বলেন, ‘আমরা এক গবেষণায় দেখেছি ৭০ শতাংশ ডায়াবেটিসের রোগী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ এ দুটো পরস্পরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। যে বিষয়গুলো ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত, যেমন- অতি ওজন, ধূমপান, মন্দ খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা বা বংশগতি। এগুলো হৃদরোগেরও ঝুঁকি। তাই এ দুটো সমস্যা পরস্পরের হাত ধরেই চলে। একটির ঝুঁঁকি কমালে অপরটির ঝুঁঁকিও কমে আসে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ডায়াবেটিসের কারণে অপেক্ষাকৃত কম বয়সী মানুষের হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। ৩৫ বছরের নিচে অনেক তরুণ হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাদের অধিকাংশ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের একটি বড় অংশ হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাওয়ার আগমুহূর্ত পর্যন্ত বুঝতেই পারে না যে তার কোনো হৃদরোগ আছে। এর কারণ হলো ডায়াবেটিস আমাদের স্নায়ুবিক অনুভূতিকে ভোঁতা করে দেয়। যার ফলে অন্যদের মতো হৃৎপিন্ডে সমস্যা হলে বুকে ব্যথা বা চাপ লাগা, ঘাম অথবা পরিচিত উপসর্গগুলো তাদের প্রায়ই হয় না। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় সাইলেন্ট মায়োকার্ডিয়াল ইনরফার্কশন বা নীরব হার্ট অ্যাটাক। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে পারলে অনেক জটিল রোগের হাত থেকে মুক্তি মিলবে।’