নারায়ণগঞ্জ ০৪:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
নিজের অপকর্ম ঢাকতে মহানগর ছাত্রদল সভাপতি সাগরের বিরুদ্ধে শামিম ঢালীর মানববন্ধন সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি নেতার চাঁদাবাজি, বিচাররের দাবিতে মানববন্ধন রূপগঞ্জের ফকির ফ্যাশন লিঃ শ্রমিকদের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী তৎপর চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি-ছাত্রদলের সংঘর্ষ আহত-৮ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি সভাপতির নাম ভাঙ্গিয়ে শামিম ঢালীর চাঁদাবাজি  মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে আটককৃত এক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যু মহানগর বিএনপি সদস্য সচিবের মামলায় ৫৩ জনের নামে, অজ্ঞাত ১৫০ নারায়ণগঞ্জ জেলায় ৫৫টি আগ্নেয়াস্ত্র জমা না করায় অবৈধ ঘোষণা বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্প সরিয়ে নিতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে- বিকেএমইএর সভাপতি নানা আয়োজনে রিয়াদে এনটিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

আইনি জটিলতায় ২০ মাসেও হচ্ছে না সোনারগাঁও পৌরসভার নির্বাচন

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১৮৪ বার পড়া হয়েছে

সোনারগাঁও প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলাটি ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। ১০ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেলেও আইনি জটিলতায় সোনাগাঁওয়ের একমাত্র পৌরসভাটির নির্বাচন। নির্বাচনি এলাকার সীমানা নিয়ে মামলার কারণে মেয়াদ শেষ হওয়ার ২০ মাসেও হচ্ছে না সোনারগাঁ পৌরসভার নির্বাচন। বর্তমানে সোনারগাঁ পৌরসভায় নির্বাচিত কোন জনপ্রতিনিধি না থাকায় সকল ধরনের উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে পরেছে। নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পৌরবাসী।স্থানীয় বিচার-শালিস, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সত্যায়ন, ওয়ারিশ সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের কাজে পৌরসভার বাসিন্দারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার নানা সমস্যা থাকলেও সেগুলো নিরসনে বর্তমানে কোন উদ্যোগ নেই। পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলররা কেউ দায়িত্বে না থাকায় এসব উন্নয়ন কাজ এখন বন্ধ হয়ে আছে। গত বছরের ২৪ ফেব্রæয়ারী সোনারগাঁও পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হয়। মেয়াদ শেষের ১৫ মাস পর গত ১৬ মে পৌরসভা পরিষদ বিলুপ্ত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহীকে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ফলে পৌরবাসীর প্রয়োজনীয় কাজকর্মের জন্য এখন দৌড়াতে হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যলয়ে।
জানা গেছে, সোনারগাঁও পৌরসভার ছোট শীলমান্দি ও মল্লিকপাড়া মৌজার কিছু জমি ইকোনমিক জোনের জন্য কর্তন করে পার্শ্ববর্তী মোগরাপাড়া ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত করে ভূমি মন্ত্রণালয়। পরে তৎকালীন পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান বাদী হয়ে এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। এ রিট পিটিশন নিষ্পত্তি না হওয়ায় সোনারগাঁও পৌরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নির্বাচন ঝুলে রয়েছে। বর্তমানে প্রশাসক হিসেবে বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে পৌরসভা পরিচালনা করছেন সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী। বিগত দুই বছর ধরে সোনারগাঁও পৌরসভার নির্বাচনকে ঘিরে হাফ ডজন মেয়র প্রার্থী ও অর্ধশত কাউন্সিলর প্রার্থী মাঠে সরব থাকলেও নির্বাচন অনিশ্চিত হওয়ায় সবার মধ্যে এখন হতাশা বিরাজ করছে। অনেকেই প্রচার প্রচারনা থেকে ইতিমধ্যে নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়েছেন। পাশাপাশি পৌরসভার সাধারণ মানুষও অনেকটাই হতাশ।
সোনারগাঁও পৌরসভার বাসিন্দা মজিবুর রহমান জানান, সোনারগাঁও পৌরসভায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় আমরা নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে, কিন্তু মশা নিধনের কোনও ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছে না। স্থানীয় কাউন্সিলর থাকলে তাকে বললে আমরা আগে এর প্রতিকার পেতাম। এখন তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
এ পৌরসভার মধ্যে ঐতিহাসিক পানাম নগরী ও সোনারগাঁও জাদুঘরসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র থাকায় প্রতিদিন এখানে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে। এখানকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির বিকল্প নেই। যেহেতু মোগরাপাড়া ইউনিয়নের সঙ্গে সীমানা নিয়ে বিবাদ ছিল, এরই মধ্যে সেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে, তাই সরকার দ্রæত সোনারগাঁও পৌরসভার নির্বাচনেরও ব্যবস্থা করবে বলে পৌরবাসী আশা করেন।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউসুফ-উর-রহমান জানান, যেহেতু সোনারগাঁও পৌরসভার সীমানা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান সুতরাং এটা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনাই নেই।
সোনারগাঁও পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী জানান, সোনারগাঁওয়ের মতো একটি গূরুত্বপূর্ণ পৌরসভায় অবিলম্বে নির্বাচন প্রয়োজন, কিন্তু মামলার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। পৌরসভার সাবেক মেয়র এ মামলার বাদী, সুতরাং তিনি এ মামলা নিষ্পত্তির ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে পারেন।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

নিজের অপকর্ম ঢাকতে মহানগর ছাত্রদল সভাপতি সাগরের বিরুদ্ধে শামিম ঢালীর মানববন্ধন

আইনি জটিলতায় ২০ মাসেও হচ্ছে না সোনারগাঁও পৌরসভার নির্বাচন

আপডেট সময় : ০৬:৪৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

সোনারগাঁও প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলাটি ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। ১০ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেলেও আইনি জটিলতায় সোনাগাঁওয়ের একমাত্র পৌরসভাটির নির্বাচন। নির্বাচনি এলাকার সীমানা নিয়ে মামলার কারণে মেয়াদ শেষ হওয়ার ২০ মাসেও হচ্ছে না সোনারগাঁ পৌরসভার নির্বাচন। বর্তমানে সোনারগাঁ পৌরসভায় নির্বাচিত কোন জনপ্রতিনিধি না থাকায় সকল ধরনের উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে পরেছে। নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পৌরবাসী।স্থানীয় বিচার-শালিস, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সত্যায়ন, ওয়ারিশ সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের কাজে পৌরসভার বাসিন্দারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার নানা সমস্যা থাকলেও সেগুলো নিরসনে বর্তমানে কোন উদ্যোগ নেই। পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলররা কেউ দায়িত্বে না থাকায় এসব উন্নয়ন কাজ এখন বন্ধ হয়ে আছে। গত বছরের ২৪ ফেব্রæয়ারী সোনারগাঁও পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হয়। মেয়াদ শেষের ১৫ মাস পর গত ১৬ মে পৌরসভা পরিষদ বিলুপ্ত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহীকে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ফলে পৌরবাসীর প্রয়োজনীয় কাজকর্মের জন্য এখন দৌড়াতে হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যলয়ে।
জানা গেছে, সোনারগাঁও পৌরসভার ছোট শীলমান্দি ও মল্লিকপাড়া মৌজার কিছু জমি ইকোনমিক জোনের জন্য কর্তন করে পার্শ্ববর্তী মোগরাপাড়া ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত করে ভূমি মন্ত্রণালয়। পরে তৎকালীন পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান বাদী হয়ে এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। এ রিট পিটিশন নিষ্পত্তি না হওয়ায় সোনারগাঁও পৌরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নির্বাচন ঝুলে রয়েছে। বর্তমানে প্রশাসক হিসেবে বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে পৌরসভা পরিচালনা করছেন সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী। বিগত দুই বছর ধরে সোনারগাঁও পৌরসভার নির্বাচনকে ঘিরে হাফ ডজন মেয়র প্রার্থী ও অর্ধশত কাউন্সিলর প্রার্থী মাঠে সরব থাকলেও নির্বাচন অনিশ্চিত হওয়ায় সবার মধ্যে এখন হতাশা বিরাজ করছে। অনেকেই প্রচার প্রচারনা থেকে ইতিমধ্যে নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়েছেন। পাশাপাশি পৌরসভার সাধারণ মানুষও অনেকটাই হতাশ।
সোনারগাঁও পৌরসভার বাসিন্দা মজিবুর রহমান জানান, সোনারগাঁও পৌরসভায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় আমরা নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে, কিন্তু মশা নিধনের কোনও ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছে না। স্থানীয় কাউন্সিলর থাকলে তাকে বললে আমরা আগে এর প্রতিকার পেতাম। এখন তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
এ পৌরসভার মধ্যে ঐতিহাসিক পানাম নগরী ও সোনারগাঁও জাদুঘরসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র থাকায় প্রতিদিন এখানে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে। এখানকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির বিকল্প নেই। যেহেতু মোগরাপাড়া ইউনিয়নের সঙ্গে সীমানা নিয়ে বিবাদ ছিল, এরই মধ্যে সেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে, তাই সরকার দ্রæত সোনারগাঁও পৌরসভার নির্বাচনেরও ব্যবস্থা করবে বলে পৌরবাসী আশা করেন।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউসুফ-উর-রহমান জানান, যেহেতু সোনারগাঁও পৌরসভার সীমানা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান সুতরাং এটা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনাই নেই।
সোনারগাঁও পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী জানান, সোনারগাঁওয়ের মতো একটি গূরুত্বপূর্ণ পৌরসভায় অবিলম্বে নির্বাচন প্রয়োজন, কিন্তু মামলার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। পৌরসভার সাবেক মেয়র এ মামলার বাদী, সুতরাং তিনি এ মামলা নিষ্পত্তির ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে পারেন।