রূপগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া এলাকায় বায়েজিদ বাহিনী নামক একদল সন্ত্রাসীর তান্ডবে অতিষ্ট হয়ে পরেছে এলাকাবাসি। দীর্ঘদিন ধরে মাঝিপাড়া এলাকার মামুন মিয়ার ছেলে বায়েজিদের নেতৃত্বে ২৫/৩০ সদস্যের একদল সন্ত্রাসী এলাকায় চাদাবাজি, ছিনতাই, ভাংচুর, লুটপাট, অপহরণ ও মাদক ব্যবসা করে আসছে। তাদের বিরূদ্ধে কেউ বাধা দিতে গেলেই হামলার শিকার হতে হয় এলাকার মানুষ।
গত ১৬ এপ্রিল শুক্রবারসন্ত্রাসী বায়েজিদের নেতৃত্বে ১০/১২ সদস্যের একদল রামদা, ছুরি, চাপাতি, কুড়াল ও লোহার রড সহ দেশিয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মাঝিপাড়া গ্রামের শাহজাহান মিয়ার বাড়িতে হামলা ও লুটপাট করে। পরে শাহজাহানের স্ত্রী মহিতুন বেগম (৬২) ও তার পূত্রবধূ মোর্শেদা আক্তার (২০) বাধা দিতে গেলে তাদেরকে এলোপাথারিভাবে পিটিয়ে আহত করে। তাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের স্থানীয় লোকজন ছুটে আসলে সন্ত্রাসীরা তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে শাহজাহান মিয়ার ছেলে মাহবুুব আলম আহত অবস্থায় তার মা মহিতুন বেগম ও ভাবী মোর্শেদা আক্তারকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা করান। এ বিষয়ে শাহজাহান মিয়ার ছোট ছেলে মাহবুব আলম (৩২) বাদী হয়ে মাঝিপাড়া গ্রামের মামুন মিয়ার ছেলে বায়েজিদ (২২), সাজ্জাদ (২০), একই এলাকার আমিনুল ইসলামের ছেলে শুভ (২০), মনির হোসেনের ছেলে রিফাত (২০), গাফফার (২২), শফিউল্লাহ (২০) সহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
শুধু তাই নয় গত ১৮ এপ্রিল রবিবার রাতে বায়েজিদ বাহিনী ও খসরু বাহিনীর সন্ত্রাসীরা একজোট হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মাঝিপাড়া এলাকার রাশিদুল হকের (৫০) বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ আতংক সৃষ্টি করে। তার বসত ঘরে ঢুকে স্টিলের আলমারি ভাংচুর করে ড্রয়ের থেকে নগদ ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ও লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণালংকার লুট করে। তার ছেলে রিশাদ হোসেন তাদের বাধা দিতে আসলে সন্ত্রাসীরা তাকে বাড়ির বাইরে নিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে এলোপাথারিভাবে মারধর করে অজ্ঞান অবস্থায় রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়। পরে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে মোঃ রাশিদুল হক বাদী হয়ে মিরকুটিছেও গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে মোঃ খসরু (৩০), শফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ আরিফ (২০), আব্দুল বাতেনের ছেলে শাহদাত হোসেন (২৩), মাহির (১৮), মোঃ মহির ছেলে মফিজুল ইসলাম (২৫), লোকমান হোসেনের ছেলে নূর মোহাম্মদ ওরফে নূরা (২০), আব্দুল হালিম শাহীন (২০), মামুন মিয়ার ছেলে বায়েজিদ (২২), সাজ্জাদ (২০), আমিনুল ইসলামের ছেলে শুভ (২০) ও আবুল কালামের ছেলে আবিদকে (১৯) সহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
মাঝিপাড়া এলাকার আবুল কালাম মোল্লার বাড়ির নির্মাণ কাজে বাধা দিয়ে চাঁদা দাবি করেন। পরে চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় বায়েজিদ তার সন্ত্রাসী দল নিয়ে কালাম মোল্লাকে মারধর করে নীলাফুল জখম করে।
এ ব্যাপারে মনির হোসেন বলেন, তার বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু করার পর থেকেই তারা বাধা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে ২০ হাজার টাকা দিতে রাজি হলে বাড়ির কাজ পুণরায় শুরু করতে দেয়। কিন্তু এ ২০ হাজার টাকার জন্য তাকে এখনও বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে এমনকি বাড়ি ঘর ভেঙে ফেলবে বলেও হুমকি দেয়।
মাঝিপাড়ার স্থানীয়রা জানান, এ বায়েজিদ বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসব অপকর্ম, হামলা, লুটপাট ও অপহরণ করছে। তাদের বিরূদ্ধে রূপগঞ্জ চাঁদাবাজি ও অপহরণ সহ একাধিক মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার খবর পেয়ে গতকাল ১৯ মার্চ সোমবার বায়েজিদ ও খসরু তাদের সন্ত্রাসী দল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এলাকায় হামলা করার চেষ্টা করে পরে এলাকাবাসি একত্রিত হয়ে বের হওয়ায় সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীম উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।