নারায়ণগঞ্জ ০২:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দেশ ও জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করতে হবে – মুহাম্মাদ গিয়াসউদ্দিন ‘বিএনপির সাইনবোর্ডে’ সোনারগাঁয়ে চাঁদার নিয়ন্ত্রণ ও দখলের অভিযোগ সেলিম সরকারের বিরুদ্ধে নিজের অপকর্ম ঢাকতে মহানগর ছাত্রদল সভাপতি সাগরের বিরুদ্ধে শামিম ঢালীর মানববন্ধন সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি নেতার চাঁদাবাজি, বিচাররের দাবিতে মানববন্ধন রূপগঞ্জের ফকির ফ্যাশন লিঃ শ্রমিকদের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী তৎপর চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি-ছাত্রদলের সংঘর্ষ আহত-৮ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি সভাপতির নাম ভাঙ্গিয়ে শামিম ঢালীর চাঁদাবাজি  মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে আটককৃত এক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যু মহানগর বিএনপি সদস্য সচিবের মামলায় ৫৩ জনের নামে, অজ্ঞাত ১৫০ নারায়ণগঞ্জ জেলায় ৫৫টি আগ্নেয়াস্ত্র জমা না করায় অবৈধ ঘোষণা

শীতলক্ষ্যার তীরে পাথর বালুর ব্যবসা ওয়াকওয়ে নষ্ট বনায়ন উজাড়

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪১:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৯
  • ৩৬১ বার পড়া হয়েছে

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর দখল করে গড়ে তুলা হয়েছে পাথর বালুর ব্যবসা। নদীর তীরে নির্মিত ওয়াকওয়ে নষ্ট করে মালামাল লোড-আনলোড করার জেটি ও সিঁড়ি বানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। ধ্বংস করছে সরকারি অর্থে গড়ে তুলা বনায়ন (ইকোপার্ক)। এতে হারিয়েছে নদীর পাড়ের সৌন্দর্য। যেখানে থাকার কথা বনায়ন সেখানে শুভা পাচ্ছে পাথর বালুর স্তুপ।
নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর সূত্রে জানা গেছে, হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক শীতলক্ষ্যা নদী দখল ও দূষণ মুক্ত রাখতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে কর্তৃপক্ষ। দখল মুক্ত করা হয় নদীর তীরের সরকারি জমি। পরে ২০১৫ সালে ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীর পশ্চিম তীরে নারায়ণগঞ্জ অংশে সাড়ে সাত কিলোমিটার দীর্ঘ ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়। কাঁচপুর সেতুর দক্ষিণে আটি ওয়াপদা ও উত্তরে শিমরাইল এলাকায় নদীর পাড়ের সৌন্দর্য বর্ধনে গড়ে তুলা হয় সবুজ বনায়ন। কয়েক একর জায়গা জুড়ে লাগানো হয় লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে কড়ই মেহগনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।
জানা গেছে, কাঁচপুর সেতুর পশ্চিম পাশে শিমরাইলে বাংলাদেশ পেপার মিলের উত্তর পাশ থেকে বেঙ্গল ইলেক্ট্রিক কারখানার দক্ষিণ প্রান্ত (প্রায় আধা কিলোমিটার) এলাকায় ঘাট হিসেবে জহিরুল ইসলাম নামে একজনের নিকট শর্ত সাপেক্ষে ইজারা দেয় নারায়ণগঞ্জ বিআইডব্লিউটিএ। ইজারার মেয়াদ ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। ইজারার শর্তের মধ্যে রয়েছে, ইজারা এলাকার পাশের ফোরশোরে (নদী ও স্থলের মধ্যবর্তী তট) রোপিত গাছগুলোর কোনোরূপ ক্ষতি, ধ্বংস বা নষ্ট করা যাবে না এবং ফোরশোরে কোনোক্রমেই কোন ধরণের মালপত্র স্তুপ করা যাবে না। ইজারাদার ইজারা নেয়া ঘাট, পয়েন্ট অন্য কারো কাছে উপ-ইজারা বা উপ-ভাড়া দিতে পাবেন না। যেকোনো শর্ত না মানলে ঘাট ইজারা বাতিল করে নতুনভাবে ইজারা দেওয়া হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইজাদার জহিরুল ইসলাম কোনো শর্তই মানছেন না। দুই থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত অগ্রিম নিয়ে মাসে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ভাড়ায় একাধিক ব্যবসায়ীর কাছে নদীর তীর উপভাড়া দিয়েছে। এসব ভাড়াটিয়ারা নদী ভরাট, ওয়াকওয়ে ও বনায়ন নষ্ট করে বাঁশের জেডি এবং সিঁড়ি বানিয়ে পাথর বালু লোড-আনলোড করছে। গাছ কেটে জায়গা বানিয়ে পাথর ও বালু স্তুপ করে রাখছে। ইজারাদার ছাড়াও অর্ধশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার অধিকাংশই ইজারাদারের উপভাড়াটিয়া। অন্যরা কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ব্যবসা করছে। একই চিত্র কাঁচপুর সেতুর উত্তরে আটি ওয়াপদা এলাকায় কাঁচপুর শুক আদায় ও লেবার হ্যান্ডলিং পয়েন্ট (কাঁচপুর ল্যান্ডিং ষ্টেশন) এলাকায়। শর্ত মানছেন না ইজারাদার জালাল উদ্দিন। সাইলোগেইট, সুমিলপাড়া ও গোদানাইল এলাকার ঘাটগুলো চলছে শর্ত না মেনে।
এ বিষয়ে ইজারাদার জহিরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি ওয়াকওয়ে ও বনায়ন নষ্ট করছেন না দাবি করে বলেন, নদী বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ১ বছরের জন্য ইজারা নিয়ে নিয়ম মেনে বৈধ ভাবে ব্যবসা করছেন। এ ঘাটে তিনি ছাড়াও আরো অনেক ব্যবসায়ী রয়েছেন যাদের কোন বৈধতা নেই। উপ-ভাড়া দেওয়ার প্রসঙ্গটি তিনি এড়িয়ে যান।
নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ন-পরিচালক শেখ মাসুদ কামাল জানান, এ ধরনের অভিযোগ পেয়েছি। ইজারাদারকে শতর্ক করা হয়েছে। ইজারার শর্ত মতে ওয়াকওয়ে ও বনানয়ন নষ্ট করার কোন অবকাশ নাই। যদি এ রকম কাজ করার প্রমাণ পাই তাহলে ইজারা বাতিলসহ কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

দেশ ও জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করতে হবে – মুহাম্মাদ গিয়াসউদ্দিন

শীতলক্ষ্যার তীরে পাথর বালুর ব্যবসা ওয়াকওয়ে নষ্ট বনায়ন উজাড়

আপডেট সময় : ০৯:৪১:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৯

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর দখল করে গড়ে তুলা হয়েছে পাথর বালুর ব্যবসা। নদীর তীরে নির্মিত ওয়াকওয়ে নষ্ট করে মালামাল লোড-আনলোড করার জেটি ও সিঁড়ি বানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। ধ্বংস করছে সরকারি অর্থে গড়ে তুলা বনায়ন (ইকোপার্ক)। এতে হারিয়েছে নদীর পাড়ের সৌন্দর্য। যেখানে থাকার কথা বনায়ন সেখানে শুভা পাচ্ছে পাথর বালুর স্তুপ।
নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর সূত্রে জানা গেছে, হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক শীতলক্ষ্যা নদী দখল ও দূষণ মুক্ত রাখতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে কর্তৃপক্ষ। দখল মুক্ত করা হয় নদীর তীরের সরকারি জমি। পরে ২০১৫ সালে ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীর পশ্চিম তীরে নারায়ণগঞ্জ অংশে সাড়ে সাত কিলোমিটার দীর্ঘ ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়। কাঁচপুর সেতুর দক্ষিণে আটি ওয়াপদা ও উত্তরে শিমরাইল এলাকায় নদীর পাড়ের সৌন্দর্য বর্ধনে গড়ে তুলা হয় সবুজ বনায়ন। কয়েক একর জায়গা জুড়ে লাগানো হয় লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে কড়ই মেহগনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।
জানা গেছে, কাঁচপুর সেতুর পশ্চিম পাশে শিমরাইলে বাংলাদেশ পেপার মিলের উত্তর পাশ থেকে বেঙ্গল ইলেক্ট্রিক কারখানার দক্ষিণ প্রান্ত (প্রায় আধা কিলোমিটার) এলাকায় ঘাট হিসেবে জহিরুল ইসলাম নামে একজনের নিকট শর্ত সাপেক্ষে ইজারা দেয় নারায়ণগঞ্জ বিআইডব্লিউটিএ। ইজারার মেয়াদ ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। ইজারার শর্তের মধ্যে রয়েছে, ইজারা এলাকার পাশের ফোরশোরে (নদী ও স্থলের মধ্যবর্তী তট) রোপিত গাছগুলোর কোনোরূপ ক্ষতি, ধ্বংস বা নষ্ট করা যাবে না এবং ফোরশোরে কোনোক্রমেই কোন ধরণের মালপত্র স্তুপ করা যাবে না। ইজারাদার ইজারা নেয়া ঘাট, পয়েন্ট অন্য কারো কাছে উপ-ইজারা বা উপ-ভাড়া দিতে পাবেন না। যেকোনো শর্ত না মানলে ঘাট ইজারা বাতিল করে নতুনভাবে ইজারা দেওয়া হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইজাদার জহিরুল ইসলাম কোনো শর্তই মানছেন না। দুই থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত অগ্রিম নিয়ে মাসে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ভাড়ায় একাধিক ব্যবসায়ীর কাছে নদীর তীর উপভাড়া দিয়েছে। এসব ভাড়াটিয়ারা নদী ভরাট, ওয়াকওয়ে ও বনায়ন নষ্ট করে বাঁশের জেডি এবং সিঁড়ি বানিয়ে পাথর বালু লোড-আনলোড করছে। গাছ কেটে জায়গা বানিয়ে পাথর ও বালু স্তুপ করে রাখছে। ইজারাদার ছাড়াও অর্ধশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার অধিকাংশই ইজারাদারের উপভাড়াটিয়া। অন্যরা কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ব্যবসা করছে। একই চিত্র কাঁচপুর সেতুর উত্তরে আটি ওয়াপদা এলাকায় কাঁচপুর শুক আদায় ও লেবার হ্যান্ডলিং পয়েন্ট (কাঁচপুর ল্যান্ডিং ষ্টেশন) এলাকায়। শর্ত মানছেন না ইজারাদার জালাল উদ্দিন। সাইলোগেইট, সুমিলপাড়া ও গোদানাইল এলাকার ঘাটগুলো চলছে শর্ত না মেনে।
এ বিষয়ে ইজারাদার জহিরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি ওয়াকওয়ে ও বনায়ন নষ্ট করছেন না দাবি করে বলেন, নদী বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ১ বছরের জন্য ইজারা নিয়ে নিয়ম মেনে বৈধ ভাবে ব্যবসা করছেন। এ ঘাটে তিনি ছাড়াও আরো অনেক ব্যবসায়ী রয়েছেন যাদের কোন বৈধতা নেই। উপ-ভাড়া দেওয়ার প্রসঙ্গটি তিনি এড়িয়ে যান।
নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ন-পরিচালক শেখ মাসুদ কামাল জানান, এ ধরনের অভিযোগ পেয়েছি। ইজারাদারকে শতর্ক করা হয়েছে। ইজারার শর্ত মতে ওয়াকওয়ে ও বনানয়ন নষ্ট করার কোন অবকাশ নাই। যদি এ রকম কাজ করার প্রমাণ পাই তাহলে ইজারা বাতিলসহ কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।