নারায়ণগঞ্জ ১০:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সিদ্ধিরগঞ্জ আ’ লীগের গর্বের দুর্গের দুর্বলতা স্পষ্ট রিয়াদে প্রবাসী লেখকের ১০ম বইয়ের মোড়ক উন্মোচন সোনারগাঁয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ মিছিলে মহাসড়ক অবরোধ পাইনাদী নতুন মহল্লা সমাজকল্যাণ সংস্থার কার্যালয় উদ্বোধন সিদ্ধিরগঞ্জে ছাত্র বলাৎকারের অভিযোগে মাদ্রাসার শিক্ষক গ্রেপ্তার সিদ্ধিরগঞ্জের মহাসড়ক যেন ময়লার ভাগাড়,দূষিত পরিবেশে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি আড়াইহাজারে ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় ৮ জন গ্রেপ্তার সিদ্ধিরগঞ্জে মিতালী মার্কেটের অর্থ আত্নসাত করেও অপপ্রচারে লিপ্ত জামান সোনারগাঁ জামপুরে খোকার সন্ত্রাসী হামলায় দলিল লেখক রতন আহত র্যাবের হাতে চাদাঁবাজির টাকাসহ ৬ চাদাঁবাজ গ্রেফতার

আড়াইহাজারের সবজির কদর দেশ জুড়ে

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৪:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ২৬৯ বার পড়া হয়েছে

আড়াইহাজারে উৎপাদিত সবজির কদর এখন দেশ জুড়ে। বিষমুক্ত হওয়ায় দিন দিনই বাড়ছে এ এলাকার সবজির চাহিদা। এতে করে স্থানীয় চাহিদা মিঠিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এখানকার সবজি প্রতিদিনই রপ্তানি করা হচ্ছে। এতে কৃষকরা মৌসুমের শুরুতেই দারুণভাবে লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০ টন সবজি উৎপাদন করতে ১৮৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালিন বিভিন্ন ধরনের সবজি আবাদের টার্গেট নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ১৬৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালিন সবজি উৎপাদন শুরু হয়েছে।

উপজেলার ফতেপুর, ব্রাহ্মন্দী, বিশ^নন্দী, সদাসদী, হাইজাদী, দুপতারা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা দিনভর জমিতে কাজ করছেন। দেখা গেছে, অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক উচ্চ ডিগ্রি নিয়েও চাকরির পেছনে না ঘুরে নিজেদের জমিতে আবার কেউ কেউ জমি বন্ধক নিয়েও বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। স্থানীয় চাহিদা মিঠিয়ে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকায় সবজি রপ্তানি করা হচ্ছে।

প্রতিটি এলাকায় শীতকালিন আগাম জাতের সবজি উৎপাদন করা হয়েছে। এতে করে কৃষকরা অতিবৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক নানা প্রতিকুলতায় ক্ষতি হওয়া ফসলের ক্ষতি কাটিয়ে কৃষকরা লাভের মুখ দেখতে পারছেন। এ বছর প্রায় সাত হাজারের অধিক কৃষক তাদের জমিতে শীতকালিন সবজি আবাদ করেছেন। এসব সবজির মধ্যে রয়েছে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, পালংশাক, টমেটো, লাউ, ধনেপাতা, লেটুসপাতা, বাটিশাক, বটবটি, সীম, বাঁধাকপি (চায়না), স্কোয়াস (বিদেশী) ও দেশীয় জাতের মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদী ।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ফতেপুর ইউনিয়নের নাগেরচর এলাকায় জমিগুলি সবুজে সবুজে ছেয়ে গেছে। পতিত জমিতে এখন ফলছে সোঁনা। কৃষকরা ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমিতে সফলের যতœ নিচ্ছেন। উদ্দেশ্য তাদের একটাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাজারে সবজি উঠানো। কারণ শীতের শুরুতে সবজির দাম বেশী পাওয়া যায়। তাই ব্যস্ততাও একটু বেশী। প্রথম দাপে উৎপাদিত সবজি অনেকেই বাজারে বিক্রি করতে শুরু করছেন।

কৃষক আল-আমিন জানান, তিনি এ বছর ৯০ শতাংশ পতিত জমিতে লালশাক, পালংশাক ও ধনেপাতার আবাদ করেছেন। তিনটি সবজির বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এতে করে তিনি প্রতিদিনই বাজারে বিক্রি করছেন। এরই মধ্যে তিনি ১ লাখ ২০হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছেন। তিনি আশা করছেন প্রথম দাপের সবজি বিক্রি শেষ করেই ফের জমিতে বীজ রোপণ করবেন। আবহাওয়া অনুকলের থাকলে আগামী দেড় মাসের মধ্যে তিনি দ্বিতীয় দাপের উৎপাদিত সবজিও বিক্রি করতে পারবেন। চলতি মৌসুমে তিনি ৩ লাখ টাকার সবজি বিক্রির টার্গেট নিয়েছেন বলে জানান।

মিজান জানান, তিনি আড়াইহাজার সরকারি সফর আলী কলেজ থেকে বিএসএস পাশ করেন। তবে কোনো চাকরির পেছনেই ঘুরে তিনি সময় নষ্ট না করে নিজেদের জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে সবজি আবাদ করছেন। তিনি জমিতে কোনো প্রকার রাসায়নিক সারের ব্যবহার করেন না। তিনি জৈবসার ও আলোক ফাঁদ ব্যবহার করেই সবজির আশানুরুপ উৎপাদন পাচ্ছেন। তাকে উপজেলা কৃষি সম্প্রাসরণ অধিদফতরের মাঠকর্মীরা সর্বদাই বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে করে তার উৎপাদন ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে। তার দেখাদেখি অনেক বেকার যুবক সবজি চাষে ঝুঁকছেন।

প্লান্ট ডক্টর আকলিমা আক্তার জানান, প্লান্ট ডক্টর ক্লিনিকের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি এলাকায় টিম ওয়ার্ক করা হচ্ছে। মাটির গুনাগুন ঠিক রাখতে আলোক ফাঁদসহ উৎপাদন ধরে রাখতে জৈবসার (কেঁেচাসার) ব্যবহারে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর অফিসার আবদুল কাদির জানান, বিষমুক্ত উৎপাদন হওয়ায় চাহিদা বেড়েছে। এতে অনেক বেকার যুবক সবজি আবাদের দিকে ঝুঁকছেন এবং লাভবান হচ্ছেন। চাষাবাদে বিষাক্ত ক্যামিক্যাল ব্যবহার না হওয়ায় বিশে^র বিভিন্ন দেশেও সবজির কদর বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, চলতি মৌসুমে প্রায় ২০ টন সবজি উৎপাদনের টার্গেট নেয়া হয়েছে। চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করতে দারিদ্র্য কৃষকদের মাঝে সার ও বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

সিদ্ধিরগঞ্জ আ’ লীগের গর্বের দুর্গের দুর্বলতা স্পষ্ট

আড়াইহাজারের সবজির কদর দেশ জুড়ে

আপডেট সময় : ০৭:৫৪:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০১৭

আড়াইহাজারে উৎপাদিত সবজির কদর এখন দেশ জুড়ে। বিষমুক্ত হওয়ায় দিন দিনই বাড়ছে এ এলাকার সবজির চাহিদা। এতে করে স্থানীয় চাহিদা মিঠিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এখানকার সবজি প্রতিদিনই রপ্তানি করা হচ্ছে। এতে কৃষকরা মৌসুমের শুরুতেই দারুণভাবে লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০ টন সবজি উৎপাদন করতে ১৮৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালিন বিভিন্ন ধরনের সবজি আবাদের টার্গেট নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ১৬৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালিন সবজি উৎপাদন শুরু হয়েছে।

উপজেলার ফতেপুর, ব্রাহ্মন্দী, বিশ^নন্দী, সদাসদী, হাইজাদী, দুপতারা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা দিনভর জমিতে কাজ করছেন। দেখা গেছে, অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক উচ্চ ডিগ্রি নিয়েও চাকরির পেছনে না ঘুরে নিজেদের জমিতে আবার কেউ কেউ জমি বন্ধক নিয়েও বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। স্থানীয় চাহিদা মিঠিয়ে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকায় সবজি রপ্তানি করা হচ্ছে।

প্রতিটি এলাকায় শীতকালিন আগাম জাতের সবজি উৎপাদন করা হয়েছে। এতে করে কৃষকরা অতিবৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক নানা প্রতিকুলতায় ক্ষতি হওয়া ফসলের ক্ষতি কাটিয়ে কৃষকরা লাভের মুখ দেখতে পারছেন। এ বছর প্রায় সাত হাজারের অধিক কৃষক তাদের জমিতে শীতকালিন সবজি আবাদ করেছেন। এসব সবজির মধ্যে রয়েছে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, পালংশাক, টমেটো, লাউ, ধনেপাতা, লেটুসপাতা, বাটিশাক, বটবটি, সীম, বাঁধাকপি (চায়না), স্কোয়াস (বিদেশী) ও দেশীয় জাতের মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদী ।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ফতেপুর ইউনিয়নের নাগেরচর এলাকায় জমিগুলি সবুজে সবুজে ছেয়ে গেছে। পতিত জমিতে এখন ফলছে সোঁনা। কৃষকরা ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমিতে সফলের যতœ নিচ্ছেন। উদ্দেশ্য তাদের একটাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাজারে সবজি উঠানো। কারণ শীতের শুরুতে সবজির দাম বেশী পাওয়া যায়। তাই ব্যস্ততাও একটু বেশী। প্রথম দাপে উৎপাদিত সবজি অনেকেই বাজারে বিক্রি করতে শুরু করছেন।

কৃষক আল-আমিন জানান, তিনি এ বছর ৯০ শতাংশ পতিত জমিতে লালশাক, পালংশাক ও ধনেপাতার আবাদ করেছেন। তিনটি সবজির বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এতে করে তিনি প্রতিদিনই বাজারে বিক্রি করছেন। এরই মধ্যে তিনি ১ লাখ ২০হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছেন। তিনি আশা করছেন প্রথম দাপের সবজি বিক্রি শেষ করেই ফের জমিতে বীজ রোপণ করবেন। আবহাওয়া অনুকলের থাকলে আগামী দেড় মাসের মধ্যে তিনি দ্বিতীয় দাপের উৎপাদিত সবজিও বিক্রি করতে পারবেন। চলতি মৌসুমে তিনি ৩ লাখ টাকার সবজি বিক্রির টার্গেট নিয়েছেন বলে জানান।

মিজান জানান, তিনি আড়াইহাজার সরকারি সফর আলী কলেজ থেকে বিএসএস পাশ করেন। তবে কোনো চাকরির পেছনেই ঘুরে তিনি সময় নষ্ট না করে নিজেদের জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে সবজি আবাদ করছেন। তিনি জমিতে কোনো প্রকার রাসায়নিক সারের ব্যবহার করেন না। তিনি জৈবসার ও আলোক ফাঁদ ব্যবহার করেই সবজির আশানুরুপ উৎপাদন পাচ্ছেন। তাকে উপজেলা কৃষি সম্প্রাসরণ অধিদফতরের মাঠকর্মীরা সর্বদাই বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে করে তার উৎপাদন ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে। তার দেখাদেখি অনেক বেকার যুবক সবজি চাষে ঝুঁকছেন।

প্লান্ট ডক্টর আকলিমা আক্তার জানান, প্লান্ট ডক্টর ক্লিনিকের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি এলাকায় টিম ওয়ার্ক করা হচ্ছে। মাটির গুনাগুন ঠিক রাখতে আলোক ফাঁদসহ উৎপাদন ধরে রাখতে জৈবসার (কেঁেচাসার) ব্যবহারে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর অফিসার আবদুল কাদির জানান, বিষমুক্ত উৎপাদন হওয়ায় চাহিদা বেড়েছে। এতে অনেক বেকার যুবক সবজি আবাদের দিকে ঝুঁকছেন এবং লাভবান হচ্ছেন। চাষাবাদে বিষাক্ত ক্যামিক্যাল ব্যবহার না হওয়ায় বিশে^র বিভিন্ন দেশেও সবজির কদর বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, চলতি মৌসুমে প্রায় ২০ টন সবজি উৎপাদনের টার্গেট নেয়া হয়েছে। চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করতে দারিদ্র্য কৃষকদের মাঝে সার ও বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।