আড়াইহাজার উপজেলার দাসিরদিয়া এলাকায় স্থানীয় এক ইউপি সদস্যকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা না দিতে পারায় সানোয়ারা বেগম ও তার পরিবারের লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের হানিফ মিলনায়তনে অনুষ্ঠেয় এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সানোয়ার বেগম।
তিনি অভিযোগে উল্লেখ্য করেন, ৪ বছর পূর্বে দাসিরদিয়া এলাকার মৃত মউক্কার ছেলে সিরাজুল ইসলাম ঘরে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এ ব্যাপারে আড়াইহাজার থানায় জিডি করলে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু আদালতে আসামীকে সাত মাসের জেল দেয়।
সাত মাস কারাগারে থাকার পর আসামি খালাস পায়। বর্তমানে এলাকার মেম্বার এবং সন্ত্রাসীদের মুলহোতা শাহ আলমের নেতৃত্বে আসামীও অন্যান্যরা আমার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আমার ও আমার পরিবারের জীবনাশের হুমকি দেয়। কোনো উপায় না পেয়ে গত দেড় মাস আগে রাতের আধারে পরিবারসহ পালিয়ে আসি। সে হুমকি দেয় এক সপ্তাহের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে না পারলে ভিটে মাটির ছাড়া করবে।
এ ব্যাপারে আড়াইহাজার থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করলে তদন্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। কিন্তু অবস্থার কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় শাহ আলম মেম্বারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে গেলে আড়াইহাজার থানার পুলিশ এতে অপরাগতা প্রকাশ করে।
উল্লেখ্য যে, শাহআলম মেম্বার দাশিরদা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। অনেক অভিযোগ থাকলেও এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
পরবর্তীতে সানোয়ারা বেগম এ বছর অক্টোবর ৩০ তারিখে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করে (স্মারক নং-১০.১০৭ অপরাধ)।
লিখিত বক্তব্য তিনি আরো জানান, পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ করতে না পারায় শাহ আলম মেম্বার আমার বাড়িঘর জোরপূর্বক দখল করে রাখায় ভিটা-বাড়ি হারিয়ে বাহিরে বাহিরে মানবেতর জীবনযাপন করছে সানোয়ারা বেগম ও তাঁর পরিবার।
প্রতিনিয়ত শাহ আলম মেম্বার আমার ও আমার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। আমি এবং আমার পরিবার সবসময় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এমতাবস্থায় সানোয়ারা বেগম ও তার পরিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের নিকট সাহায্যে কামনা করে ৫ লাখ টাকা চাঁদার দাবি এবং জোরপূর্বক বাড়ি দখলের প্রতিবাদ জানিয়ে সন্ত্রাসী চক্রের মুলহোতা শাহ আলম মেম্বার এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানায়।
এদিকে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দলের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা ও ইউপি সদস্য এলাকায় নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করে চলছেন। এলাকায় বিশেষ সুবিধার বিনিময়ে বিচার-শালিস করা তার নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি সাধারণ মানুষের ওপর নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করলেও কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না। তবে ইউপি সদস্য শাহআলম এসব অভিযোগ অস্বীকার বলেন, অভিযোগ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। কেউ তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছেন।