শত বছরেও বিদ্রোহী কবিতার আবেদন ফুরিয়ে যায়নি মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, বিদ্রোহী কবিতা আমাদের জাতি সত্ত্বার কবি, প্রাণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের এক অমর স্মৃষ্টি। ১৯২১ সালে কাজী নজরুল ইসলাম সৃষ্টি করেছিলেন এই কালজয়ী কবিতা। এ কবিতাটি রচনার মাধ্যমে কবি নজরুল ইসলাম তৎকালীন কলকাতা যথা বাংলা-ভারতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। বিদ্রোহী কবিতা রচনার মাধ্যমে কবি নজরুল পরিচিত হয়েছিন ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসাবে।
রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনের যাদু ময়িা মিলনায়তনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের “বিদ্রোহী” কবিতার শতবর্ষ উপলক্ষে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা শতবর্ষ উদযাপন নাগরিক কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বৃটিশ শাসকদের প্রায় দু’শ বছরের অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়নে জর্জরিত জাতিকে শোষণের বিরুদ্ধে দাড়ানোর উৎসাহ যুগিয়ে স্বাধীনতার জন্য প্রাণ যুগিয়েছিলেন আমার প্রাণের কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বিদ্রোহী কবিতাটি রচনার মাধ্যমে কাজী নজরুল ইসলাম পরাধিন ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে কঠোর জবাব দিয়েছিলেন। সাথে নিজেও ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে জড়িত হয়ে পড়েন।
তিনি আরো বলেন, বৃটিশ বিরোধী পরাধীনতার শৃংখল ভেঙ্গে ভারতের তরুণ সমাজকে স্বাধীনতা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়তে উৎসাহ যুগিয়েছিল বিদ্রোহী কবিতা। জীর্ণশীর্ণ ও দু’শ বছরের একটি পরাধীন জাতিকে একটি স্বাধীন ও শোষণমুক্ত সমাজ গঠনে বিদ্রোহী কবিতার ভূমিকা অত্যান্ত গূরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ২০২১ সালেই কাজী নজরুল ইসলামের অমর সৃষ্টি বিদ্রোহী কবিতার শত বছর পূর্ণ হচ্ছে। এই শত বছরেও বিদ্রোহী কবিতার আবেদন ফুড়িয়ে যায়নি। এই কবিতার আবেদন রয়ে গেছে আগের মতই। মনে হয় কবিতা সৃষ্টি হয়েছে সকল সময়ের জন্য, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অত্যাচারের বিরুদ্ধে গনমানুষের মুক্তির কথা নিয়ে।
জাসদ উপদেষ্টা ও নাগরিক কমিটির সদস্য এনামুজ্জামান চৌধুরী’র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বাংলাদেশ ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, বিশিষ্ট মানবাধিকার সংগঠক নবাব সালেহ আহমদ, জাতীয় নারী আন্দোলন সভাপতি মিতা রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক কাকলী রহমান প্রমুখ।
এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, ঔপনিবেশিক ভারতের সেই সময় যখন নজরুল আবির্ভূত হলেন, তখন তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঔপনিবেশিক বিরোধিতা বড় করে তুলছেন। বল বীর, চির উন্নত মম শির, এই বীর তিনি বলছেন সমস্ত বাঙ্গালিকে, যে বীরের মতো তোমরা উঠে দাঁড়াও।
তিনি বলেন, কাজী নজরুল বিদ্রোহী কবিতার মাধ্যমে ভীরু বাঙ্গালিকে উদ্দীপ্ত করে তুলতে চেয়েছেন, তাদের জাগ্রত করতে অসংখ্য শব্দের ঝংকারে কবিতাটি যেন পাগলের মতো ছোটাছুটি করছে।
সভাপতির বক্তব্যে এনামুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বিদ্রোহী কবিতাটি বাংলার সমাজ জীবনে, রাজনৈতিক জীবনে, বিভিন্ন আন্দোলনে অত্যন্ত প্রভাব বিস্তার করেছে। বাংলা সাহিত্যে “বিদ্রোহী” কবিতা ছাড়া আর কোন কবিতা এত বেশী আলোড়ন সৃষ্টি করতে পেরেছিল বলে আমার জানা নাই। বিদ্রোহী কবিতা রচনার শত বছর পরেও সেই আবেদন এতটুকুও হ্রাস পায় নাই।