নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ড. সেলিনা হায়াত আইভীর হস্তক্ষেপে বন্ধ করা হয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জের পাঠানটুলীস্থ নারায়ণগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে ভবন নির্মাণ কাজ। শিক্ষর্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মেয়রের নির্দেশে গতকাল রোববার সাড়ে এগারোটায় সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিন সরেজমিন পরিদর্শণ করে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। একই সময়ে প্রতিষ্ঠানের সামনে মানববন্ধনরত শিক্ষার্থীরা এসিদ্ধান্তে আশস্থ হয়ে তাদের সকল কর্মসূচি স্থগিত করে।
জানা গেছে, ৬ দশমিক ৫০ একর জমির উপর ১৯৮৪ সালে এই শিা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে বারশত জন শিার্থী রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি খেলার মাঠ, একটি ছাত্র ও একটি ছাত্রী বাস করা হয়। সৌন্দয্যবর্ধনের জন্য বড় একটি পুকুর ও নানা জাতের বৃক্ষও রয়েছে।
সম্প্রতি শিা প্রকৌশল অধিদপ্তর কতৃক কারিগরি স্কুল ও কলেজের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের অনুমোদনে আট কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে ২১৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৫২ ফুট প্রশস্থ পাঁচ তলা একাডেমি কাম-ওয়ার্কসপ ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পর্যাপ্ত খালি জায়গা থকার পরও কর্তৃপক্ষ খেলার মাঠের মাঝখানে ভবন নির্মাণ করায় প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীরা। মাঠ রক্ষার দাবিতে প্রথমে ৩১ মে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো: সেলিম মৃধা, দুই জুন জেলা প্রশাসক মো: মোস্তাইন বিল্লাহ বরাবর স্বারকলিপি দেয়। কোন প্রতিকার না পেয়ে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। পরে আট জুন সিটি মেয়র ড. সেলিনা হায়াত আইভী বরাবর লিখিত অভিযোগ করে। তখন মেয়র তাৎক্ষনিক ভাবে সিটি কর্পোরেশনের একটি প্রতিনিধি দল সরেজমিন পরিদর্শনে পাঠান। ওই দিন থেকেই নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ১৩ জুন সিটির নির্বাহী কর্মকর্তাকে পরিদর্শনের তারিখ নির্ধারণ করেন। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সিটির নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিন সরেজমিন পরিদর্শন করেন। এসময় মাঠ রক্ষায় সম্মিলিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রতিষ্ঠানের সামনে মানব বন্ধন করছিল।
পরিদর্শণ শেষে আবুল আমিন গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, আপাদত সাময়ীক ভাবে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে সম্মত হয়েছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অধিদফতরের সঙ্গে আলোচনা করে পরিবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকবে।
মাঠ রক্ষায় সম্মিলিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মুখপাত্র গোলাম মোস্তফা সাচ্ বলেন, যেহেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হয়েছে। তাই আমরা আমাদের সকল কর্মসূচি স্থাগিত করেছি। শিক্ষার্থীদের মনোভাব ও দাবি গুরুত্ব দিয়ে কর্তৃপক্ষ খেলার মাঠটি নষ্ট না করে ভবন নির্মাণের স্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিবেন বলে আশা করছি।
কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম মৃধা বলেন, ভবন নির্মাণের স্থানটি আমি যোগদান করার আগে নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই এবিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি নয়।