সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : হুজুরের সাথে দৈহিক সম্পর্ক করা জায়েজ, হুজুরের কথা শোনা ফরজ, না শোনলে গোনাহ হবে, জাহান্নামে যাবে, এমন মনগড়া হাদিস ও ফতোয়া শোনিয়ে ১১ জন ছাত্রীকে ৩ বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছিল বলে স্বীকার করেছে র্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃত নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার ভূঁইগড় এলাকার দারুল হুদা মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ওরফে বড় হুজুর মো: মোস্তাফিজুর রহমান জসিম (২৯)। বাদ যায়নি নিকটাতœীয় ৮ বছরের এক শিশু। এই হুজুরের লালসার শিকার ছাত্রীদের বয়স ১০ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে।
র্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আলেপ উদ্দিন স্বাক্ষরীত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নারী লিপ্সু বড় হুজুরের স্বীকারোক্তির তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, তার মিথ্যা প্রলোভন ও ফাঁদে না পড়লে ছাত্রীদের জোর করে ধর্ষণ করতো। ধর্ষণের চিত্র ভিডিও করে ছাত্রীদের দেখিয়ে কাউকে বললে চরিত্রহীন অখ্যা দিয়ে মাদ্রাসা থেকে বেড় করে দেওয়ার হুমকি দিতো। ফলে ভয়ে ছাত্রীরা মুখ খোলেনি। এছাড়াও মিথ্যা হাদিস বলে অভিভাবক ও স্বাক্ষী ছাড়া বিয়ে হয়েছে বলে ছাত্রীদের স্ত্রীর মত ব্যবহার করতো। খায়েস মিঠে গেলে আবার মিথ্যা হাদিস বলে তালাক হয়ে যাওয়ার কথা বলে মাদ্রাসা থেকে বেড় করে দিতো।
নেত্রকোনা জেলার লক্ষীগঞ্জ কাওয়ালী কোণা গ্রামের মো: ওয়াজেদ আলীর ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান ৬ বছর আগে ভুঁইগড় এলাকায় দারুল হুদা মহিলা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। মাদ্রসার একটি অংশে সে তার পরিবার নিয়ে বসবাস ও অপর অংশে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালনা করতো।
র্যাব জানায়,অভিভাবক ও ছাত্রীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে গত শনিবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে মাদ্রাসা থেকে বড় হুজুর খ্যাত মোস্তাফিজুর রহমান জসিমকে আটক করা হয়। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় র্যাব।
উল্লেখ্য, ফতুল্লার মাহমুদপুর এলাকায় ১২ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে বাইতুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসার অধ্য মাওলানা মো: আল আমিনকে গত ৪ জুলাই গ্রেফতার করে র্যাব। তার আগে ২৭ জুন সিদ্ধিরগঞ্জে অক্সফোর্ড স্কুলের বিশ ছাত্রীকে ৪ বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগে সহকারী শিক আরিফুল ইসলাম সরকারকে গ্রেফতার করে র্যাব। তারা দুজনই জেল হাজতে রয়েছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় উদ্ধিগ্ন হয়ে পড়ছে অভিভাবক মহল।