সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় ফ্যামিলি ল্যাব হসপিটালের মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসি। রোগীদের জিবন বিপন্নকারী অবৈধ এই কিনিকে র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে ভূয়া এমবিবিএস ডাক্তার মো: নূরুল ইসলাম শেখকে(২৭) গ্রেফতার করে ১ বছরের কারাদন্ড প্রদান করা হলেও কিনিক মালিক মো: বেলাল হোসেন ভূঁইয়া রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। কিনিকের আড়ালে অবৈধ ভাবে গোপনে কিনিকের ভিতরে সয়া নামে অন্ত:সত্তা মহিলাদের পুষ্টি ও যৌন উত্তেজক ওষুধ তৈরি করার আলামত পেয়েছে র্যাব। হাসপাতালটিতে রোগী না থাকলেও একাধিক কক্ষে রয়েছে অবৈধ সয়া তৈরির মেশিনপত্র। বাস্তবতা দেখে মনে হয় এটি কিনিক নয় যেন একটি শিল্প কারখানা।
জানা গেছে, র্যাব-১১ সিপিএসসির কোম্পানি অধিনায়ক তালুকদার নাজমুস সাকিব ও অতিরিক্ত এএসপি জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে সহকারি কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আনিসুল ইসলাম এর উপস্থিতিতে ২ এপ্রিল রাত সাড়ে ৭ টায় ফ্যামিলি ল্যাব হসপিটালে অভিযান চালায় র্যাব। এসময় এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগী দেখার সময় মো: নূরুল ইসলাম নামে ১ ভূয়া ডাক্তারকে হাতে নাতে গ্রেফতার করে ১ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমান আদালত। প্রয়োজনীয় কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারায় আদালত হসপিটাল সিলগালা করে দেয়।
অভিযান পরিচালনার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আনিসুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছন, ফ্যামিলি ল্যাব হসপিটাল লিমিটেড কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তাছাড়া ওই হসপিটালে সয়া নামে একটি পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। যা আন্ত:সত্তা মহিলাদের পুষ্টিকর ও সেক্সচুয়াল হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। অপরেশন থিয়েটারের অবস্থা নাজুক। প্রয়োজনীয় কোন চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই। অবৈধ ভাবে কিনিক গড়ে তুলার অভিযোগে মালিকের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে।
স্থানীয়রা জানায়, ঢাকা থেকে প্রকাশিত অনিয়মিত দৈনিক সরেজমিন পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মো: বেলাল হোসেন ভূইয়া অবৈধ ভাবে ফ্যামিলি ল্যাব হসপিটাল গড়ে তুলেছেন। এই কিনিকে দীর্ষদিন ধরে চিকিৎসার নামে প্রতারনাসহ নানা অপকর্ম চলছিল। বি-বাড়ীয়া জেলার কসবা থানার গোপিনাথপুর উত্তর পাড়ার মৃত কাজী ইসমাইল ভূঁইয়ার ছেলে বেলাল হোসেন গণমাধ্যম কর্মীর দাপট দেখিয়ে বুক ফুলিয়ে কিনিকের আড়ালে অন্য ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। অবৈধ এই কিনিকের অপকর্ম বিষয়ে অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশ করতে গত ২ হাজার ১৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক কিনিকে গিয়ে সত্যতা যাচাই করতে চাইলে বেলাল হোসেন তার পালিত ক্যাডার ও দালাল চক্রের সহায়তায় ওই সাংবাদিকদের আটক করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে সাজানো চাঁদাবাজি ও ভাংচুর লুটপাটের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে। ওই মামলা নারায়ণগঞ্জ আদালতে এখনো চলমান রয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের হয়রানী করার পর ভয়ে স্থানীয়রা এই কিনিকের অপকর্মের প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। ফলে কিনিক মালিক বেলাল হোসেন শতাধিক যুবতী মেয়েকে নার্স হিসেবে নিয়োগ দিয়ে শুরু করে ভিন্ন ব্যবসা। এসব নার্সরা বিত্তবান পরিবারের পুরুষদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে দেহবিলিয়ে দিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং করে মোটা অংকের অর্থ আদায় করে। গত ২ হাজার ১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শিমরাইল মোড়ে এক যুবককে ব্ল্যাকমেইলিং করতে গিয়ে নার্স নামধারী এক যুবতীসহ ফ্যামিলি ল্যাব হসপিটালের ৬ প্রতারককে গ্রেফতার করেছিল থানা পুলিশ। যা বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। তার পরও রহস্য জনক কারণে জেলা সিভিল সার্জন ও পুলিশ প্রশাসন এই কিনিকের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করেননি। দীর্ঘদিন পর হলেও র্যাব এই কিনিকের অবৈধ কর্মকান্ডের তথ্য পেয়ে অভিযান পরিচলনা করে হসপিটাল সিলগালা করায় এলাকাবাসী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি কিনিক মালিক বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।