সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আটি হাউজিং এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ সিন্ডিকেট চক্র। তিতাস কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত এ সিন্ডিকেট অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।
জানা গেছে, আটি হাউজিং এলাকায় কয়েক বছরে কমপক্ষে আড়াইশতাধিক আবাসিক বহুতল ভবন গড়ে উঠেছে। সরকারিভাবে আবাসিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকলেও এসব ভবনের প্রতিটি ফ্ল্যাটে জ্বলছে গ্যাসের চুলা। আবাসিক সংযোগ বন্ধ থাকার পরও তিতাস কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে কেহ বৈধ সংযোগ নিলেও অধিকাংশই অবৈধ। তাছাড়া ভবনে বৈধভাবে যতগুলি চুলা রয়েছে অবৈধর সংখ্যা তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। এসব অবৈধ চুলার বিল নিচ্ছেন সিন্ডিকেটের লোকজন। মাঝে তিতাসের লোকজন অভিযান চালিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও রাতের আঁধারে সিন্ডিকেট সদস্যরা আবার সংযোগ দিয়ে দেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ তিতাসের সুবিধাভোগী একশ্রেণির কর্মকর্তা,হাউজিং প্লট ও ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল আউয়াল, স্থানীয় বাসিন্দা গণি মিয়া, মুক্তার হোসেন, মোহর, সোহাগসহ দশ পনেরোজনের একটি সিন্ডিকেট হাউজিং এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিটি ভবনের অবৈধ চুলার বিল নিচ্ছেন সিন্ডিকেট সদস্যরা। হাউজিং এলাকায় অন্তত কয়েক হাজার অবৈধ চুলা জ্বলছে অবৈধভাবে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভবন মালিক জানান, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গ্যাস সংযোগ নিয়ে তাদের কাছে বিল পরিশোধ করতে হয়। অন্যথায় তিতাসের লোকজন এনে অভিযান চালিয়ে ভবনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে ভবন মালিকরা সিন্ডিকেটের সঙ্গে সমঝোতা করে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করতে হচ্ছে। গ্যাস সরকারি হলেও স্থানীয় সিন্ডিকেট বিল নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভবন মালিকরা।
নারায়ণগঞ্জ তিতাসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিন্ডিকেট করে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে বিল নেওয়ার সত্যতা শিকার করে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি একাধিকবার আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। গত ডিসেম্বরে কর্তৃপক্ষ অভিযান চালিয়ে ৭৭ টি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন করেছেন। কিন্তু অভিযান চালিয়ে চলে যাওয়ার পর সিন্ডিকেটের লোকেরা আবার সংযোগ দিয়ে দেয়।
সিন্ডিকেটে জড়িত থাকার অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে হাউজিং প্লট ও ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল আউয়াল বলেন, ডিসেম্বরে অভিযানের আগে একটি চক্র বিল উত্তোলন করত। কিন্তু অভিযানের পর তা বন্ধ ছিল। এখন আবার বিল নিচ্ছে বলে শুনতেছি। তবে কারা নিচ্ছে তা জানার চেষ্টা করছি।
নারায়ণগঞ্জ তিতাসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মামুন বলেন, অবৈধ সংযোগের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। খুব শিগ্রই হাউজিং এলাকায় অভিযান চালাব।