নারায়ণগঞ্জ ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সিদ্ধিরগঞ্জ আ’ লীগের গর্বের দুর্গের দুর্বলতা স্পষ্ট রিয়াদে প্রবাসী লেখকের ১০ম বইয়ের মোড়ক উন্মোচন সোনারগাঁয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ মিছিলে মহাসড়ক অবরোধ পাইনাদী নতুন মহল্লা সমাজকল্যাণ সংস্থার কার্যালয় উদ্বোধন সিদ্ধিরগঞ্জে ছাত্র বলাৎকারের অভিযোগে মাদ্রাসার শিক্ষক গ্রেপ্তার সিদ্ধিরগঞ্জের মহাসড়ক যেন ময়লার ভাগাড়,দূষিত পরিবেশে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি আড়াইহাজারে ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় ৮ জন গ্রেপ্তার সিদ্ধিরগঞ্জে মিতালী মার্কেটের অর্থ আত্নসাত করেও অপপ্রচারে লিপ্ত জামান সোনারগাঁ জামপুরে খোকার সন্ত্রাসী হামলায় দলিল লেখক রতন আহত র্যাবের হাতে চাদাঁবাজির টাকাসহ ৬ চাদাঁবাজ গ্রেফতার

অবৈধ সম্পদ অর্জন মামলায় দুদকের চার্জশিট : তবু থামেনি মতির গতি

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:২৫:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৩২১ বার পড়া হয়েছে

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ছয় নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি ও তার স্ত্রী রোকেয়া রহমানের বিরুদ্ধে ২৩ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে দুদক সচিব মো: মাহবুব হোসেন এর সত্যতা নিশ্চিত করেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের সুমিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা ক্ষমতাধর এই দম্পত্তির বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধ উপায়ে ১৬ কোটি টাকা উপার্জনের অভিযোগে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাদী হয়ে পৃথক দুইটি মামলা করেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ধারায় মামলা দুইটি করা হয়। মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জনের গতি কমেনি মতির।
মামলার এজাহারে মতিউর রহমানের বিরদ্ধে ৬ কোটি ১ লাখ ৭২ হাজার ২৬৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৫ হাজার ৬৩৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংকে ৮২ কোটি ৫১ লাখ ৪২৪ টাকা জমা করে পরবর্তীতে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮৯ টাকা উত্তোলন করে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্থান্তর করে অবস্থান গোপনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। অপর মামলায় মতির স্ত্রী রোকেয়া রহমানের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৬১ লাখ ১৮ হাজার ৩৯৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ১ কোটি ৮৬ লাখ ৬৭ হাজার ৩৯৫ টাকা জমা করে সেখান থেকে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৮ টাকা উত্তোলন করে তা স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের পর অবস্থান গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে এই দম্পতির অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ২৩ কোটি মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেড, চরশিমুল পাড়ায় ওরিয়ন গ্রুপ, সুমিলপাড়া সাতঘোড়া সিমেন্ট কারখানা, গোদনাইলে পদ্মা ও মেঘনা দুইটি জ্বালানি তেলের ডিপোসহ অনেক শিল্পকারখানা রয়েছে নাসিকের ছয় নম্বর ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম জ্বালানি তেল চুরি। তাছাড়া আদমজী ইপিজেড, শিল্প কারখানা ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রন। এসব বড় বড় অবৈধ আয়ের সব উৎস এককভাবে নিয়ন্ত্রন করছেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি। ফলে তিনি নামে বেনামে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। দুদক মামলা করার পরও মতির অবৈধ সম্পদ অর্জন অব্যাহত থাকে।
দলীয় সূত্র জানায়, নব্বই দশকে জাতীয় পার্টি ছেড়ে যুবলীগে যোগদেয় মতি। গোদনাইল এসও এলাকায় বিএনপির মিছিলে বোমা হামলা করে আলোচনায় উঠে মতি। কারণ বোমা হামলায় মনা নামে এক যুবক নিহত হয়েছিলেন। ১৯৯২ সালে আইলপাড়াস্থ মতির বাড়ি সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদের উপর শাহ আলম বাবু নামে এক যুবককে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করার পর থেকেই এলাকার ত্রাস হিসেবে উত্থান ঘটে মতির। পরে ২০০৩ সালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহবায়ক হওয়ার পর থেকেই মতিকে আর পিছনে ফিরে থাকাতে হয়নি।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

সিদ্ধিরগঞ্জ আ’ লীগের গর্বের দুর্গের দুর্বলতা স্পষ্ট

অবৈধ সম্পদ অর্জন মামলায় দুদকের চার্জশিট : তবু থামেনি মতির গতি

আপডেট সময় : ১২:২৫:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২২

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ছয় নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি ও তার স্ত্রী রোকেয়া রহমানের বিরুদ্ধে ২৩ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে দুদক সচিব মো: মাহবুব হোসেন এর সত্যতা নিশ্চিত করেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের সুমিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা ক্ষমতাধর এই দম্পত্তির বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধ উপায়ে ১৬ কোটি টাকা উপার্জনের অভিযোগে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাদী হয়ে পৃথক দুইটি মামলা করেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ধারায় মামলা দুইটি করা হয়। মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জনের গতি কমেনি মতির।
মামলার এজাহারে মতিউর রহমানের বিরদ্ধে ৬ কোটি ১ লাখ ৭২ হাজার ২৬৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৫ হাজার ৬৩৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংকে ৮২ কোটি ৫১ লাখ ৪২৪ টাকা জমা করে পরবর্তীতে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮৯ টাকা উত্তোলন করে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্থান্তর করে অবস্থান গোপনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। অপর মামলায় মতির স্ত্রী রোকেয়া রহমানের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৬১ লাখ ১৮ হাজার ৩৯৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ১ কোটি ৮৬ লাখ ৬৭ হাজার ৩৯৫ টাকা জমা করে সেখান থেকে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৮ টাকা উত্তোলন করে তা স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের পর অবস্থান গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে এই দম্পতির অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ২৩ কোটি মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেড, চরশিমুল পাড়ায় ওরিয়ন গ্রুপ, সুমিলপাড়া সাতঘোড়া সিমেন্ট কারখানা, গোদনাইলে পদ্মা ও মেঘনা দুইটি জ্বালানি তেলের ডিপোসহ অনেক শিল্পকারখানা রয়েছে নাসিকের ছয় নম্বর ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম জ্বালানি তেল চুরি। তাছাড়া আদমজী ইপিজেড, শিল্প কারখানা ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রন। এসব বড় বড় অবৈধ আয়ের সব উৎস এককভাবে নিয়ন্ত্রন করছেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি। ফলে তিনি নামে বেনামে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। দুদক মামলা করার পরও মতির অবৈধ সম্পদ অর্জন অব্যাহত থাকে।
দলীয় সূত্র জানায়, নব্বই দশকে জাতীয় পার্টি ছেড়ে যুবলীগে যোগদেয় মতি। গোদনাইল এসও এলাকায় বিএনপির মিছিলে বোমা হামলা করে আলোচনায় উঠে মতি। কারণ বোমা হামলায় মনা নামে এক যুবক নিহত হয়েছিলেন। ১৯৯২ সালে আইলপাড়াস্থ মতির বাড়ি সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদের উপর শাহ আলম বাবু নামে এক যুবককে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করার পর থেকেই এলাকার ত্রাস হিসেবে উত্থান ঘটে মতির। পরে ২০০৩ সালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহবায়ক হওয়ার পর থেকেই মতিকে আর পিছনে ফিরে থাকাতে হয়নি।