সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল-ক) নাজমুল হাসান বলেছেন, আপনাদের যে ধরনের সহযোগিতা লাগবে জানাবেন আমরা সর্বত্বভাবে আপনাদের পাশে আছি, থাকবো। প্রত্যেকটি পূজামন্ডপে আমাদের ফোর্স মোতায়ন থাকবে, সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে, একই সাথে কুর্সাল পরিহিত পুলিশও থাকবে।
আমার তিন স্তরের নিরাপত্তা আমরা প্রদান করব, যাতে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অপ্রীতিকর ঘটনা কিংবা কোন ধরনের অপরাধ না গঠতে পারে। আমরা আমাদের জায়গায় দায়িত্ব পালনে বদ্ধপরিকর। এটা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন- সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান, পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান, কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন ও পূজা উদযাপন কমিটির নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি শিশির ঘোষ ওমর, সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র বর্মনসহ বিভিন্ন পূজা মন্ডপের নেতৃবৃন্দ।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, আপনাদের কাছে আমাদের কিছু প্রত্যাশা আছে। থানা হতে অফিসার ইনচার্জ, অফিসার তদন্ত, অফিসার অপারেশনসহ প্রয়োজনীয় নাম্বারের তালিকা দেওয়া হয়েছে। যা প্রতিটি মÐপে দৃশ্যমান থাকতে হবে। মÐপে দর্শনার্থীরা আসবেন পূজা অর্চণা করতে কিংবা দেখতে আসবে, তাদের সাথে ব্যাগ পোটলা থাকবে এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকা লাগবে। অগ্নি দুর্ঘটনা যেন না হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
ইতিমধ্যে পূজা উদযাপন কমিটির পক্ষ হতে বলা হয়েছে সিসিটিভি ও যে সকল ইলেকট্রিক যন্ত্রাংশ কেবল ব্যবহার করা হবে সেগুলি যেন কোয়ালিটি সম্পন্ন হয়। কোন রকমের স্পাকিং হয়ে যেন কোন দুর্ঘটনা না ঘটে।
মাদক সেবন ও অন্যান্য কোন অসামাজিক কার্যকলাপ, মেলা হাউজিং এ সকল করা যাবে না। একই সাথে বলা আছে কোন ধরনের অপ্রয়োজনে মাইকিং করা, উচ্চস্বরে গান বাজানো, আযনের সময় সম্পূর্ণভাবে অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা ব্যাপারটিও এখানে বলা হয়েছে। কোন ধর্মীয় বিষয়ে যেন আঘাত না লাগে। আমি আমার ধর্ম পালন করব একই সাথে অন্য কেউ অন্যের ধর্ম পালন করতে দেব এবং সম্মান করবো।
এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একই সাথে পুলিশ ফায়ার সার্ভিস এদের নাম্বার রাখার কথা এখানে বলা আছে। আমাদের বলা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া কোন কিছু দেয়ার সময় যেন আমরা সতর্ক থাকি মুসলমান হিন্দু আমরা যে ধর্মের হই না কেন আমরা প্রত্যেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে এমন কিছু রাখবো না বা পোস্ট করব না যা উষ্কানি মূলক হয়। সে বিষয়ে সতর্ক থাকা এবং এই বিষয়গুলো কিছু দেখলে পুলিশকে জানাতে হবে।
সবাই ভালো মানুষ না। কিছু দুষ্কৃতিকারী সমাজে আছে। আমি অন্য ধর্মের হতে পারি কিন্তু আমার শরীর আপনার মতই। আমার শরীরের ভেতরে রক্ত লাল, অন্য ধর্মের লোকটিরও রক্ত লাল। আমরা একই মানুষ, আমাদের জীবন প্রণালী একই, আমরা বাঙালি। দারুন গর্বের বিষয় হচ্ছে এই আমরা অসা¤প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী।
তারপরেও কিছু কিছু মানুষের জন্য এই আইন কানুন প্রস্তুতি গুলি নিতে হচ্ছে। আপনারা আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করবেন। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলে থাকেন ধর্ম যার যার উৎসব সবার। বিসর্জন দেয়ার সময় সময় মতো করবেন, যেই সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। কারণ এই সিদ্ধিরগঞ্জে একটি মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে দু’একটি মন্ডপ নিয়ে। আপনারা অনেক রাত্র করে ফেলেন, কিন্তু আমাদেরও কিছু আইনি দায়বদ্ধতা আছে। ওই সময় কিছু দুষ্ট লোক যারা কখন যে কোন ঘটনা ঘটাতে পারে।
উগ্র স¤প্রদায়িক যারা তারা সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবে। কোন কিছু ঘটাতে পারলেই তাদের মতো করে পচা শুরু করে দেবে যা বেআইনি। এদেরকে কোনরকম সুযোগ দেওয়া যাবে না। সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়টি আমরা সকলে মাথায় রেখেছি, আপনাদেরও মাথায় রাখতে হবে।
কোন অসামাজিক ঘটনা ঘটলে আমাদের সাথে সাথে জানাবেন। আমরা এই বিষয়গুলো নিয়েই সারাক্ষন কাজ করে থাকবো, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমরা অভয় দিচ্ছি আপনারা খুব সুন্দর ভাবেই পূজা উদযাপন করতে পারবেন। আপনাদের কাছে আমাদের যেটা প্রত্যাশা আপনারা সেটা বজায় রাখবেন।