নারায়ণগঞ্জ ০২:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রিয়াদে সিলেট সদর উপজেলা প্রবাসীদের উদ্যোগে সংবর্ধণা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ইনভেস্টার নজরুল ইসলামের রিয়াদ গালফ টুলেডো রেষ্টুরেন্টে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত রূপগঞ্জে ৬ দিনেও নিখোঁজ ব্যবসায়ীর সন্ধান মেলেনি রিয়াদে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত সৌদি আরবে ব্যাচ ৯৫-৯৭ এর আয়োজনে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত সৌদি আরবে বিএনপির দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত এতিমদের সন্মানে প্রবাসী সাংবাদিক ফারুক চানের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দালালরা দিচ্ছে পুলিশ ভেরিফিকেশন! রিয়াদে হুইপ নজরুল ইসলাম বাবু সংবর্ধিত ইমারত নীতিমালা মানেনি স্বপ্ন বিলাস

শিমরাইল মোড়ে মুরগী রিপন ও তার সহযোগীরা ফের চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৩০:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১
  • ১৬৫ বার পড়া হয়েছে

দৈনিক পুলিশ ও সওজ কর্মকর্তাদের নামেও টাকা উত্তলণ
শিমরাইল মোড়ে মুরগী রিপনের ও তার সহযোগীরা ফের চাঁদাবাজি

র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর জামিনে মুক্ত হয়ে রিপন ওরফে ‘মুরগী রিপন’ সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে আবারও ফুটপাত থেকে পূর্বের ন্যায় চাঁদা উত্তোলন করছে।

চলতি মাসের ৩ মে (সোমবার) সিদ্ধিরগঞ্জের হীরাঝিল আবাসিক এলাকা থেকে চাঁদাবাজ মুরগী রিপন তার সহযোগীসহ র‌্যাব-১১’র হাতে গ্রেফতার হয়।

তবে গ্রেফতারের কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি জেল থেকে বেরিয়ে আসেন। র‌্যাব-১১’র সূত্রমতে, মুরগী রিপন এলাকার শীর্ষ চাঁদাবাজ চক্রের প্রধান এবং তার সহযোগী হিসেবে কাজ করে শিপন ব্যাপারী, নাসির, শাকিল, ও ফয়েজ।

তারা দীর্ঘদিন ধরে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় ফুটপাতের দোকানদারকে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে জোরপূর্বক দোকান হতে দৈনিক ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা করে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে আসছে এবং বড় দোকান প্রতি ১ লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অগ্রীম চাঁদা আদায় করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে রিপন ওরফে ‘মুরগী রিপন’ নামে এই চাঁদাবাজ তার নিয়োজিত লোকদের (জামাল, শাকিল, নাসির ও রুহুল আমিন) দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নামে চাঁদা উত্তোলন করে।

তাদের পাশাপাশি এ ফুটপাতে এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তি, এক জনপ্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবকলীগের এক নেতা ও স্থানীয় চাঁদাবাজরা এসব দোকানপাট থেকে দৈনিক ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে থাকেন।

দোকান প্রতি ১ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অগ্রিম নেয় এ চাঁদাবাজ চক্র। ফুটপাতে গড়ে উঠা অবৈধ দোকান নির্বিঘ্নে চালাতে তারা দৈনিক পুলিশকে ম্যানেজ করার কথা বলে দোকান প্রতি এক’শ, সওজ কর্মকর্তাদের জন্য ৫০ ও বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৩০ টাকা করে মোট ১৮০ টাকা বরাদ্দ রাখেন। বাকী টাকা মুরগী রিপন নিজের জন্য ও তার সহযোগী চাঁদাবাজদের জন্য রাখেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, ‘মুরগী রিপন ও তার সহযোগীরা প্রতিদিন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক বিভাগের নাম করে এ টাকা উত্তোলন করেন।

মুরগি রিপনকে চাঁদা না দিলে তিনি ও তারা বাহিনীর সদস্যরা আমাদেরকে শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি উচ্ছেদের হুমকিসহ পুলিশ দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে আমরা তাকে ও তার নিয়োজিত ব্যক্তিদের প্রতিদিন চাঁদা দেই।’

গত বছরের ২০ ডিসেম্বও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় সওজের কর্মকর্তারা এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করে। এছাড়া ৩০ ডিসেম্বরও শিমরাইল মোড়ের ফুটপাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ শতাধিক দোকান উচ্ছেদ করে।

তবে পুলিশ স্থান ত্যাগ করার কিছুক্ষণ পরই চাঁদাবাজ রিপন বাহিনী রিক্সা লেনের ঐ জায়গা তার দখলে নিয়ে নেয়। সে থেকে অদ্যবধি পূর্বের ন্যায় রিপন চালিয়ে যাচ্ছে তার চাঁদাবাজী।

এ রাস্তায় নিয়মিত চলাচল করা দিদারুল আলম নামে এক পথচারী জানান, মহাসড়কের এসব দোকানপাট গড়ে উঠায় পথচারীদের চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রতিনিয়তই মানুষের জটলা লেগে থাকে। এতে বখাটে, পকেট মার ও ছিনতাইকারীরা থাকে সক্রিয়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর নারী পথচারীরা হয়ে পড়ে অরক্ষিত।

এলাকাবাসী জানান, মুরগী রিপনের চাঁদার একটি অংশ পুলিশ, প্রশাসনের একাধিক ব্যক্তি, স্বেচ্ছাসেবকলীগের এক নেতা ও স্থানীয় কয়েকজন কথিত সাংবাদিকদের নিকটও যায় তাই তিনি নির্বিঘ্নে শিমরাইল মোড়ের অবৈধ ফুটপাতে চাঁদাবাজী করতে পারেন।

তাদের দাবি, জনস্বার্থে শিমরাইল মোড়ের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুপাশ দখল মুক্ত করে পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান পিপিএম-বার এ প্রতিবেদককে জানান, র‌্যাব, পুলিশ, ডিবিসহ বিভিন্ন সংস্থা তাকে একাধিকবার করেছে।

সে আবারও পূর্বের মত টাকা তুলছে বলে জানতে পেরেছি। শিমরাইল মোড়ে ফুটপাতে হকারদের বসতে নিষেধ করা হয়েছে।

সেই সাথে হকারসহ ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে পুলিশের নাম করে কেউ টাকা তুললে থানায় জানাতে। অভিযোগ পেলেই সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এছাড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে কথা বলে ফুটপাত দখলকারীদের উচ্ছেদ করতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে রিপনের মোবাইলে ফোন দিলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, বিষয়টি নিয়ে আমি সরাসরি সাক্ষাতে আপনার সাথে কথা বলব। আপনার সাথে দেখা করবো।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১১ মে সিদ্ধিরগঞ্জের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় পতিতা নিয়ে ফূর্তি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন “মুরগি রিপন”।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

রিয়াদে সিলেট সদর উপজেলা প্রবাসীদের উদ্যোগে সংবর্ধণা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

শিমরাইল মোড়ে মুরগী রিপন ও তার সহযোগীরা ফের চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া

আপডেট সময় : ০৬:৩০:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১

দৈনিক পুলিশ ও সওজ কর্মকর্তাদের নামেও টাকা উত্তলণ
শিমরাইল মোড়ে মুরগী রিপনের ও তার সহযোগীরা ফের চাঁদাবাজি

র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর জামিনে মুক্ত হয়ে রিপন ওরফে ‘মুরগী রিপন’ সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে আবারও ফুটপাত থেকে পূর্বের ন্যায় চাঁদা উত্তোলন করছে।

চলতি মাসের ৩ মে (সোমবার) সিদ্ধিরগঞ্জের হীরাঝিল আবাসিক এলাকা থেকে চাঁদাবাজ মুরগী রিপন তার সহযোগীসহ র‌্যাব-১১’র হাতে গ্রেফতার হয়।

তবে গ্রেফতারের কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি জেল থেকে বেরিয়ে আসেন। র‌্যাব-১১’র সূত্রমতে, মুরগী রিপন এলাকার শীর্ষ চাঁদাবাজ চক্রের প্রধান এবং তার সহযোগী হিসেবে কাজ করে শিপন ব্যাপারী, নাসির, শাকিল, ও ফয়েজ।

তারা দীর্ঘদিন ধরে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় ফুটপাতের দোকানদারকে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে জোরপূর্বক দোকান হতে দৈনিক ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা করে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে আসছে এবং বড় দোকান প্রতি ১ লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অগ্রীম চাঁদা আদায় করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে রিপন ওরফে ‘মুরগী রিপন’ নামে এই চাঁদাবাজ তার নিয়োজিত লোকদের (জামাল, শাকিল, নাসির ও রুহুল আমিন) দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নামে চাঁদা উত্তোলন করে।

তাদের পাশাপাশি এ ফুটপাতে এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তি, এক জনপ্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবকলীগের এক নেতা ও স্থানীয় চাঁদাবাজরা এসব দোকানপাট থেকে দৈনিক ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে থাকেন।

দোকান প্রতি ১ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অগ্রিম নেয় এ চাঁদাবাজ চক্র। ফুটপাতে গড়ে উঠা অবৈধ দোকান নির্বিঘ্নে চালাতে তারা দৈনিক পুলিশকে ম্যানেজ করার কথা বলে দোকান প্রতি এক’শ, সওজ কর্মকর্তাদের জন্য ৫০ ও বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৩০ টাকা করে মোট ১৮০ টাকা বরাদ্দ রাখেন। বাকী টাকা মুরগী রিপন নিজের জন্য ও তার সহযোগী চাঁদাবাজদের জন্য রাখেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, ‘মুরগী রিপন ও তার সহযোগীরা প্রতিদিন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক বিভাগের নাম করে এ টাকা উত্তোলন করেন।

মুরগি রিপনকে চাঁদা না দিলে তিনি ও তারা বাহিনীর সদস্যরা আমাদেরকে শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি উচ্ছেদের হুমকিসহ পুলিশ দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে আমরা তাকে ও তার নিয়োজিত ব্যক্তিদের প্রতিদিন চাঁদা দেই।’

গত বছরের ২০ ডিসেম্বও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় সওজের কর্মকর্তারা এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করে। এছাড়া ৩০ ডিসেম্বরও শিমরাইল মোড়ের ফুটপাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ শতাধিক দোকান উচ্ছেদ করে।

তবে পুলিশ স্থান ত্যাগ করার কিছুক্ষণ পরই চাঁদাবাজ রিপন বাহিনী রিক্সা লেনের ঐ জায়গা তার দখলে নিয়ে নেয়। সে থেকে অদ্যবধি পূর্বের ন্যায় রিপন চালিয়ে যাচ্ছে তার চাঁদাবাজী।

এ রাস্তায় নিয়মিত চলাচল করা দিদারুল আলম নামে এক পথচারী জানান, মহাসড়কের এসব দোকানপাট গড়ে উঠায় পথচারীদের চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রতিনিয়তই মানুষের জটলা লেগে থাকে। এতে বখাটে, পকেট মার ও ছিনতাইকারীরা থাকে সক্রিয়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর নারী পথচারীরা হয়ে পড়ে অরক্ষিত।

এলাকাবাসী জানান, মুরগী রিপনের চাঁদার একটি অংশ পুলিশ, প্রশাসনের একাধিক ব্যক্তি, স্বেচ্ছাসেবকলীগের এক নেতা ও স্থানীয় কয়েকজন কথিত সাংবাদিকদের নিকটও যায় তাই তিনি নির্বিঘ্নে শিমরাইল মোড়ের অবৈধ ফুটপাতে চাঁদাবাজী করতে পারেন।

তাদের দাবি, জনস্বার্থে শিমরাইল মোড়ের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুপাশ দখল মুক্ত করে পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান পিপিএম-বার এ প্রতিবেদককে জানান, র‌্যাব, পুলিশ, ডিবিসহ বিভিন্ন সংস্থা তাকে একাধিকবার করেছে।

সে আবারও পূর্বের মত টাকা তুলছে বলে জানতে পেরেছি। শিমরাইল মোড়ে ফুটপাতে হকারদের বসতে নিষেধ করা হয়েছে।

সেই সাথে হকারসহ ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে পুলিশের নাম করে কেউ টাকা তুললে থানায় জানাতে। অভিযোগ পেলেই সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এছাড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে কথা বলে ফুটপাত দখলকারীদের উচ্ছেদ করতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে রিপনের মোবাইলে ফোন দিলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, বিষয়টি নিয়ে আমি সরাসরি সাক্ষাতে আপনার সাথে কথা বলব। আপনার সাথে দেখা করবো।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১১ মে সিদ্ধিরগঞ্জের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় পতিতা নিয়ে ফূর্তি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন “মুরগি রিপন”।