বিশেষ প্রতিনিধি : শ্রমিকের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে অধিকার আদায়ের গৌরবময় দিন মহান মে দিবস মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামি পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, এখনও শ্রমিকের অধিকার পরিপূর্ণ প্রতিষ্ঠা হয় নাই। আমাদের দেশের রমজানের প্রথম দিনে শ্রমিক তা দাবি আদায়ে রক্ত দিয়েছে। অধিকার আদায়ে এখনো রক্ত ঝরছে শ্রমিকের।
শনিবার (১ মে) মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মে দিবসে ইতিহাস যেমন আলোচিত হয়। কিন্তু শ্রমিকদের ন্যায্য দাবী-দাওয়ার অধিকাংশই আজো পর্যন্ত কি বাস্তবতার মুখ দেখেছে ? সেই প্রশ্নের উত্তর কে দেবে ? বরং এখনও বিভিন্ন দাবীর আন্দোলনে শ্রমিকদের রক্ত ঝরছে। শ্রমিক-কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া আদায় না করার প্রতিবাদে গার্মেন্টসে শ্রমিক অসন্তোষ, পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট-অবরোধ, হরতালের মত কর্মসূচী ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রমিকদের মানবেতর জীবনযাপনের চিত্রও প্রতিদিনকার সংবাদপত্রে চোখে পড়ে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে এখনও শ্রমিকরা তাদের প্রাপ্য মজুরি থেকে বঞ্চিত। দেশে এখনও মজুরি বৈষমের স্বীকার শ্রমিকরা। তাই মে দিবস শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, শ্রমিকদের যথাযোগ্য প্রাপ্য ও সুযোগ-সুবিধা দিলেই মে দিবসের স্বার্থকতা আসবে।
তিনি বলেন, আমরা শ্রম বা শ্রমিকের মর্যাদা বুঝেও বুঝতে চাই না। একজন মানুষের জীবনধারণের জন্য যা যা প্রয়োজন, অর্থাৎ অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসাথ এসবই একজন শ্রমিকের প্রাপ্য। আর এটাই হচ্ছে শ্রমিকের প্রকৃত মর্যাদা। একুশ শতকে এসে শ্রমিকরা এর কতটুকু মর্যাদা বা অধিকার ভোগ করছে? বর্তমান রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে শ্রমিকশ্রেণির স্বার্থ নিয়ে অবশ্যই ভাবতে হবে। কারণ শ্রমিকরা এ দেশের সম্পদ।
জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের সমন্বয়ক কৃষক মো. মহসীন ভুইয়া’র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বাংলাদেশ ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, যুগ্ম মহাসচিব এহসানুল হক জসীম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম, আবেল মাহমুদ, আবদুস সালাম প্রমুখ।
এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, বাংলাদেশের গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্পের দিকে নজর দিলে উপলব্ধি করা যায় এখানে শ্রমিকরা কীভাবে বঞ্চিত হচ্ছে। বঞ্চনার কারণে প্রায়ই গার্মেন্টস শিল্পে ধর্মঘট, জ্বালাও-পোড়াও ও ভাঙচুরের ঘটনা লক্ষ্য করা যায়। তবে সব গার্মেন্টস শিল্পের চিত্র এক রকম নয়। এখানে বঞ্চনার চিত্র যেমন আছে তেমনি আছে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার চিত্রও।
সভাপতির বক্তব্যে কৃষক মো. মহসীন ভুইয়া বলেন, শ্রমিকদের বঞ্চনার জন্য কোনো কোনো মালিক যেমন দায়ী, তেমনি দায়ী একশ্রেণীর শ্রমিক নেতাও। আবার দেশের গার্মেন্টস শিল্পের বিরুদ্ধে রয়েছে বিদেশী ষড়যন্ত্রও। এইসব নানা কারণে দেশের গার্মেন্টস শিল্পে শ্রমিক ও মালিকের স্বার্থ বিঘ্নিত হচ্ছে। শিল্পে শ্রমিক-মালিকের ন্যায্য স্বার্থ প্রতিষ্ঠিত না হওয়ার ব্যাপারে নানা তত্ত্বের দায়ও কম নয়।