নারায়ণগঞ্জ ১১:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে মহাসড়কে অপকর্ম চাঁদাবাজি সাংবাদিক শাওনের বাবা ফিরোজ আহমেদ আর নেই রিয়াদে জমকালো আয়োজনে মাই টিভির ১৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন রিয়াদে প্রিমিয়াম ফুটবল লীগের ফাইনাল অনুষ্ঠিত জুন মাসের ১৭ তারিখ কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভবনা রিয়াদে নোভ আল আম্মার ইষ্টাবলিস্ট এর আয়োজনে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত রিয়াদে বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত রিয়াদে জয়নাল আবেদীন ফারুক রিয়াদে বাংলাদেশ প্রবাসী সাংবাদিক ফোরামের ইফতার মাহফিলে প্রবাসীদের মিলন মেলা ফতুল্লা থানায় অভিযোগ করেও সাবেক সেনা পরিবার, পাশে পায়নি পুলিশ

সিদ্ধিরগঞ্জে মাদক পাচারে রেন্ট-এ কার

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:২৬:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ মার্চ ২০২১
  • ২০৬ বার পড়া হয়েছে

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডে টোকেনের মাধ্যমে মাসে তিন লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় মাদক পাচার করছে স্ট্যান্টের গাড়ি চালকরা। গত এক বছরে এ স্ট্যান্ডের ছয়টি গাড়ি মাদকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। গত বছরে পুলিশ স্ট্যান্ডটি উচ্ছেদ করলেও রহস্যজনক কারণে আবার চালু হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শিমরাইল মোড় রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডে আড়াই শতাধিক গাড়ি ভাড়ায় চলছে। কিছু গাড়ি চলছে অনিয়মিত নামসর্বস্ব দৈনিক পত্রিকা ও অনুমোদনহীন টিভি চ্যানেলের স্টিকার লাগিয়ে। বিভিন্ন অপরাধীরা মিডিয়া স্টিকার লাগানো এসব গাড়ি ভাড়া নিয়ে চালকদের ম্যানেজ করে ছিনতাই ও মাদক পাচার করছে নিশ্চিন্তে। গত এক বছরে দেশের বিভিন্ন জেলায় এই স্ট্যান্ডের (ঢাকা মেট্রো-গ-২৫-৩১৯৫), ( ঢাকা মেট্রো-গ-৩২-৩৬০০), (ঢাকা মেট্রো-চ-১৬-০১০১), (ঢাকা মেট্রো-গ-২৫-২৯২১), (ঢাকা মেট্রো-গ-৩৩-৮৫৭৩), (ঢাকা মেট্রো-গ-৩৯-১২১০ নম্বর) গাড়ি ফেন্সিডিল ও ইয়াবাসহ র‌্যাব, থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। মাদক পাচার করতে গিয়ে স্ট্যান্ড পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিএনপি কর্মী সালাউদ্দিনের গাড়িও পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।

অভিযোগ রয়েছে, সরকারি জায়গা দখল করে সংশ্লিষ্ট মহলকে ম্যানেজ করে এই স্ট্যান্ড গড়ে উঠে। প্রতিটি গাড়ি থেকে একেক মাসে একেক সংকেত টোকেনের মাধ্যমে চাঁদা আদায় হচ্ছে। স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রন নিয়ে মাঝে মাঝে দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। গত বছরের শেষের দিকে সংঘর্ষের ঘটনার পর থানা পুলিশ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করে দিয়েছিল। কিন্তু কয়েকদিন পর যথারিতি চালু হয়ে যায়।

গাড়ি মালিক সূত্রে জানা গেছে, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস থেকে মাসে ১৩০০ টাকা আর হাইজ গাড়ি থেকে ১৮০০ টাকা করে মাসিক চাঁদা আদায় করছে কমিটির নেতারা। স্ট্যান্ডের সুপারভাইজার সাইফুল ইসলাম আদায় করছেন চাঁদা। পরিসংখ্যান মতে আড়াইশতাধিক গাড়ি থেকে মাসে তিন লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। বিভিন্ন মহল ম্যানেজ করে চাঁদার সিংহ ভাগই বাগভাটোয়ারা করে নিচ্ছেন নেতারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গাড়ি চালক জানায়, কমিটির সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন দেশের বিভিন্ন জেলার বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেছে। এসব মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা পেয়ে সালাউদ্দিন তাদের কাছে গাড়ি ভাড়া দিয়ে অর্থের লোভে ফেলে চালকদেরকে মাদক বহন করতে বাধ্য করছে।

স্ট্যান্ডের গাড়ি মাদকসহ আটক হওয়ার কথা স্বীকার করলেও মাদক বহনে চালকদের বাধ্য করার অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে কমিটির সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন বলেন, কিছু চালক অর্থের লোভে স্বেচ্ছায় মাদক বহনে জড়িয়ে পড়ে। জানতে পারলে এসব চালকদের স্ট্যান্ড থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। চাঁদা আদায়ের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

স্ট্যান্ডের সভাপতি আমিনুল হক ভূঁইয়া রাজু বলেন, আমি সভাপতি হলেও স্ট্যান্ডের কোন খবর রাখিনা। চাঁদাবাজি বা মাদক পাচার হয় কিনা এসব বিষয়ে আমার জানা নেই।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, চাঁদাবাজি ও মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ সোচ্চার। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে মহাসড়কে অপকর্ম চাঁদাবাজি

সিদ্ধিরগঞ্জে মাদক পাচারে রেন্ট-এ কার

আপডেট সময় : ১০:২৬:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ মার্চ ২০২১

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডে টোকেনের মাধ্যমে মাসে তিন লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় মাদক পাচার করছে স্ট্যান্টের গাড়ি চালকরা। গত এক বছরে এ স্ট্যান্ডের ছয়টি গাড়ি মাদকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। গত বছরে পুলিশ স্ট্যান্ডটি উচ্ছেদ করলেও রহস্যজনক কারণে আবার চালু হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শিমরাইল মোড় রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডে আড়াই শতাধিক গাড়ি ভাড়ায় চলছে। কিছু গাড়ি চলছে অনিয়মিত নামসর্বস্ব দৈনিক পত্রিকা ও অনুমোদনহীন টিভি চ্যানেলের স্টিকার লাগিয়ে। বিভিন্ন অপরাধীরা মিডিয়া স্টিকার লাগানো এসব গাড়ি ভাড়া নিয়ে চালকদের ম্যানেজ করে ছিনতাই ও মাদক পাচার করছে নিশ্চিন্তে। গত এক বছরে দেশের বিভিন্ন জেলায় এই স্ট্যান্ডের (ঢাকা মেট্রো-গ-২৫-৩১৯৫), ( ঢাকা মেট্রো-গ-৩২-৩৬০০), (ঢাকা মেট্রো-চ-১৬-০১০১), (ঢাকা মেট্রো-গ-২৫-২৯২১), (ঢাকা মেট্রো-গ-৩৩-৮৫৭৩), (ঢাকা মেট্রো-গ-৩৯-১২১০ নম্বর) গাড়ি ফেন্সিডিল ও ইয়াবাসহ র‌্যাব, থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। মাদক পাচার করতে গিয়ে স্ট্যান্ড পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিএনপি কর্মী সালাউদ্দিনের গাড়িও পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।

অভিযোগ রয়েছে, সরকারি জায়গা দখল করে সংশ্লিষ্ট মহলকে ম্যানেজ করে এই স্ট্যান্ড গড়ে উঠে। প্রতিটি গাড়ি থেকে একেক মাসে একেক সংকেত টোকেনের মাধ্যমে চাঁদা আদায় হচ্ছে। স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রন নিয়ে মাঝে মাঝে দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। গত বছরের শেষের দিকে সংঘর্ষের ঘটনার পর থানা পুলিশ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করে দিয়েছিল। কিন্তু কয়েকদিন পর যথারিতি চালু হয়ে যায়।

গাড়ি মালিক সূত্রে জানা গেছে, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস থেকে মাসে ১৩০০ টাকা আর হাইজ গাড়ি থেকে ১৮০০ টাকা করে মাসিক চাঁদা আদায় করছে কমিটির নেতারা। স্ট্যান্ডের সুপারভাইজার সাইফুল ইসলাম আদায় করছেন চাঁদা। পরিসংখ্যান মতে আড়াইশতাধিক গাড়ি থেকে মাসে তিন লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। বিভিন্ন মহল ম্যানেজ করে চাঁদার সিংহ ভাগই বাগভাটোয়ারা করে নিচ্ছেন নেতারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গাড়ি চালক জানায়, কমিটির সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন দেশের বিভিন্ন জেলার বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেছে। এসব মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা পেয়ে সালাউদ্দিন তাদের কাছে গাড়ি ভাড়া দিয়ে অর্থের লোভে ফেলে চালকদেরকে মাদক বহন করতে বাধ্য করছে।

স্ট্যান্ডের গাড়ি মাদকসহ আটক হওয়ার কথা স্বীকার করলেও মাদক বহনে চালকদের বাধ্য করার অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে কমিটির সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন বলেন, কিছু চালক অর্থের লোভে স্বেচ্ছায় মাদক বহনে জড়িয়ে পড়ে। জানতে পারলে এসব চালকদের স্ট্যান্ড থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। চাঁদা আদায়ের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

স্ট্যান্ডের সভাপতি আমিনুল হক ভূঁইয়া রাজু বলেন, আমি সভাপতি হলেও স্ট্যান্ডের কোন খবর রাখিনা। চাঁদাবাজি বা মাদক পাচার হয় কিনা এসব বিষয়ে আমার জানা নেই।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, চাঁদাবাজি ও মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ সোচ্চার। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।