নারায়ণগঞ্জ ১০:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে মহাসড়কে অপকর্ম চাঁদাবাজি সাংবাদিক শাওনের বাবা ফিরোজ আহমেদ আর নেই রিয়াদে জমকালো আয়োজনে মাই টিভির ১৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন রিয়াদে প্রিমিয়াম ফুটবল লীগের ফাইনাল অনুষ্ঠিত জুন মাসের ১৭ তারিখ কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভবনা রিয়াদে নোভ আল আম্মার ইষ্টাবলিস্ট এর আয়োজনে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত রিয়াদে বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত রিয়াদে জয়নাল আবেদীন ফারুক রিয়াদে বাংলাদেশ প্রবাসী সাংবাদিক ফোরামের ইফতার মাহফিলে প্রবাসীদের মিলন মেলা ফতুল্লা থানায় অভিযোগ করেও সাবেক সেনা পরিবার, পাশে পায়নি পুলিশ

নারায়ণগঞ্জ সিটির পরিচ্ছন্ন ইজারাদারদের কোটি টাকার বাণিজ্য

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৪:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ মে ২০২২
  • ১৮১ বার পড়া হয়েছে

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জ সিটি করর্পোরেশন নিয়মনীতি মানছেনা বাসা বাড়ীর ময়লা অবসারণ ইজারাদাররা। মনগড়া মতে অর্থ আদায় করছে বাড়ীর মালিক ও ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে। ময়লা অপসারণের নামে রিতিমত জোর করেই মাত্রারিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। সিটির ২৭ টি ওয়ার্ডে ময়লা অপসারণ বাবদ কোটি কোট টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ইজারাদাররা।
জানা গেছে, সিটি করপোরেশন থেকে ইজারা নিয়ে সিটি এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে একাধিক ইজারাদার বাসা বাড়ীর বর্জ্য অপসারণ করছেন। বর্জ্য অপসারণের জন্য প্রতিবাসা থেকে মাসে ২০ টাকা করে আদায় করার শর্ত থাকলেও ইজারাদাররা আদায় করছে ৮০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। বাড়ীর মালিক ও ভাড়াটিয়ারা এত টাকা দিতে আপত্তি করলেও ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মদদপুষ্ট ইজাদাররা কর্ণপাত করছেননা।
নাসিক ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নিমাইকাশারী এলাকার এক বাড়ীর তিন তলার ভাড়াটিয়া শাহাদাত বলেন, মাসে একশ টাকা দেই ময়লা অপসারণ কর্মীদের। মুক্তিনগর এলাকার নিজতলার ভাড়াটিয়া ফরিদা আক্তার দেন ৮০ টাকা। একই এলাকার পাঁচ তলার ভাড়াটিয়া শহিদুল ইসলাম দেন ১২০ টাকা। শহরের ১১ নং ওয়ার্ডের শীতলক্ষ্যা হাউজের বাসিন্দা ডালিয়া আক্তার জানান তিনি দেন মাসে ১৫০ টাকা। ঈদে বকশিস দিতে হয় বলে জানান এসব ভাড়াটিয়ারা। তাছাড়া প্রতিদিনের ময়লা প্রতিদিন নিতে আসেনি। কয়েকদিন পর পর আসে। এতে ময়লার দুর্গন্ধ ভোগান্তি পোহাতে হয়। প্রতিটি ওয়ার্ডে একই হিসেবে অর্থ নেওয়া হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইজাদাররা নিজে বর্জ্য অপসারণ না করে মহল্লা ভাগ করে বিভিন্ন জনের কাছে সাবকন্ট্রাকে দিয়েছে। বর্জ্য অপসারণের গাড়িপ্রতি মাসে ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা করে নিচ্ছে ইজারাদার। প্রতিটি মহল্লায় কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ টি করে গাড়ি রয়েছে। বর্জ্য অপসারণ কর্মীদের খরচ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বাসা মালিকদের উপর। প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে মাসে গড়ে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা আদায় করছে বর্জ্য অপসারণ কর্মীরা। পরিসংখ্যান মতে সিটির ২৭ টি ওয়ার্ড থেকে ময়লা অপসারণ ইজারাদাররা হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। কাউন্সিলররাও টাকার ভাগ পাচ্ছেন বলে ইজাদাররা জানায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বর্জ্য অপসারণ একাধিক কর্মী জানায়, গাড়িপ্রতি ইজারাদারের নির্ধারিত টাকা দিতে হয়। সিটির নিয়ম মতে টাকা নিলে ইজাদারের মাসিক টাকাই দেওয়া সম্ভব হবেনা। তাই এক থেকে দুই তলা বাড়ীর বাসা থেকে ৮০ টাকা, তিন থেকে চার তলা বাসা থেকে ১০০ টাকা, পাঁচ থেকে তার উর্ধ্বে বাসা থেকে ১২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
নাসিক তিন নম্বর ওয়ার্ডের নিমাইকাশারী ও মাদানীনগর এলাকার ইজারাদার নাসির বলেন, সিটির নির্ধারণ করা মতে টাকা নিয়ে বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব না। আমার নয়টি গাড়িতে দুইজন করে ১৮ জন লোক কাজ করে। টাকা না পেলে তারা ময়লা অপসারণ করবেনা। তাই অতিরিক্ত টাকা নিতে হয়। একই কথা বলেন, অন্যান্য ওয়ার্ডের ইজারাদার।
তিন নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল বলেন, বাসা বাড়ীর ময়লা অপসারণের জন্য মহল্লা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তবে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।
সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মো: আলমগীর হিরণ বলেন, সরকারিভাবে বাসা-বাড়ীর ময়লা অপসারণ চার্জ ২০ টাকা। ইজারাদাররা অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে এমন অভিযোগ কেহ করেনি। যদি অভিযোগ পাই প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে মহাসড়কে অপকর্ম চাঁদাবাজি

নারায়ণগঞ্জ সিটির পরিচ্ছন্ন ইজারাদারদের কোটি টাকার বাণিজ্য

আপডেট সময় : ০৮:৫৪:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ মে ২০২২

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জ সিটি করর্পোরেশন নিয়মনীতি মানছেনা বাসা বাড়ীর ময়লা অবসারণ ইজারাদাররা। মনগড়া মতে অর্থ আদায় করছে বাড়ীর মালিক ও ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে। ময়লা অপসারণের নামে রিতিমত জোর করেই মাত্রারিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। সিটির ২৭ টি ওয়ার্ডে ময়লা অপসারণ বাবদ কোটি কোট টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ইজারাদাররা।
জানা গেছে, সিটি করপোরেশন থেকে ইজারা নিয়ে সিটি এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে একাধিক ইজারাদার বাসা বাড়ীর বর্জ্য অপসারণ করছেন। বর্জ্য অপসারণের জন্য প্রতিবাসা থেকে মাসে ২০ টাকা করে আদায় করার শর্ত থাকলেও ইজারাদাররা আদায় করছে ৮০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। বাড়ীর মালিক ও ভাড়াটিয়ারা এত টাকা দিতে আপত্তি করলেও ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মদদপুষ্ট ইজাদাররা কর্ণপাত করছেননা।
নাসিক ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নিমাইকাশারী এলাকার এক বাড়ীর তিন তলার ভাড়াটিয়া শাহাদাত বলেন, মাসে একশ টাকা দেই ময়লা অপসারণ কর্মীদের। মুক্তিনগর এলাকার নিজতলার ভাড়াটিয়া ফরিদা আক্তার দেন ৮০ টাকা। একই এলাকার পাঁচ তলার ভাড়াটিয়া শহিদুল ইসলাম দেন ১২০ টাকা। শহরের ১১ নং ওয়ার্ডের শীতলক্ষ্যা হাউজের বাসিন্দা ডালিয়া আক্তার জানান তিনি দেন মাসে ১৫০ টাকা। ঈদে বকশিস দিতে হয় বলে জানান এসব ভাড়াটিয়ারা। তাছাড়া প্রতিদিনের ময়লা প্রতিদিন নিতে আসেনি। কয়েকদিন পর পর আসে। এতে ময়লার দুর্গন্ধ ভোগান্তি পোহাতে হয়। প্রতিটি ওয়ার্ডে একই হিসেবে অর্থ নেওয়া হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইজাদাররা নিজে বর্জ্য অপসারণ না করে মহল্লা ভাগ করে বিভিন্ন জনের কাছে সাবকন্ট্রাকে দিয়েছে। বর্জ্য অপসারণের গাড়িপ্রতি মাসে ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা করে নিচ্ছে ইজারাদার। প্রতিটি মহল্লায় কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ টি করে গাড়ি রয়েছে। বর্জ্য অপসারণ কর্মীদের খরচ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বাসা মালিকদের উপর। প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে মাসে গড়ে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা আদায় করছে বর্জ্য অপসারণ কর্মীরা। পরিসংখ্যান মতে সিটির ২৭ টি ওয়ার্ড থেকে ময়লা অপসারণ ইজারাদাররা হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। কাউন্সিলররাও টাকার ভাগ পাচ্ছেন বলে ইজাদাররা জানায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বর্জ্য অপসারণ একাধিক কর্মী জানায়, গাড়িপ্রতি ইজারাদারের নির্ধারিত টাকা দিতে হয়। সিটির নিয়ম মতে টাকা নিলে ইজাদারের মাসিক টাকাই দেওয়া সম্ভব হবেনা। তাই এক থেকে দুই তলা বাড়ীর বাসা থেকে ৮০ টাকা, তিন থেকে চার তলা বাসা থেকে ১০০ টাকা, পাঁচ থেকে তার উর্ধ্বে বাসা থেকে ১২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
নাসিক তিন নম্বর ওয়ার্ডের নিমাইকাশারী ও মাদানীনগর এলাকার ইজারাদার নাসির বলেন, সিটির নির্ধারণ করা মতে টাকা নিয়ে বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব না। আমার নয়টি গাড়িতে দুইজন করে ১৮ জন লোক কাজ করে। টাকা না পেলে তারা ময়লা অপসারণ করবেনা। তাই অতিরিক্ত টাকা নিতে হয়। একই কথা বলেন, অন্যান্য ওয়ার্ডের ইজারাদার।
তিন নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল বলেন, বাসা বাড়ীর ময়লা অপসারণের জন্য মহল্লা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তবে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।
সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মো: আলমগীর হিরণ বলেন, সরকারিভাবে বাসা-বাড়ীর ময়লা অপসারণ চার্জ ২০ টাকা। ইজারাদাররা অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে এমন অভিযোগ কেহ করেনি। যদি অভিযোগ পাই প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।