সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পাইনাদী এলাকার বাদশা মিয়া ও জয়নাল আবেদীনগংদের প্রতারনা ফাঁস। ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তার যোগসাজশে গত বছরে ১২ জুলাই অন্যের জমি নিজেদের নামে নামজারী করে বাদশা মিয়াগং। বিষয়টি জানতে পেরে জমির মালিক হাজী চাঁন মিয়া বিজ্ঞ সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিদ্ধিরগঞ্জ সার্কেল আদালতে মিসকেস মোকদ্দমা করলে মঙ্গলবার(৩০ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ৩ টায় চুরান্ত শোনানী শেষে বাদশাগংদের নামজারী বাতিল করে দেন সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেল এর সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আনিসুল ইসলাম।
জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী পূর্ব হিরাঝিল এলাকার মৃত ফজর আলীর ছেলে হাজী চাঁনমিয়াগং পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হয়ে ৩৭ শতাংশ জমি ভোগ দখল করে আসছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ মৌজায় সিএস ও এসএ ১৫৩ আর এস ২৯১ ও ২৯২ নং দাগে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৩৭ শতাংশ জমির মধ্যে সাড়ে ১৮ শতাংশের মালিক হয় হাজী চাঁনমিয়া। আর বাকী সাড়ে ১৮ শতাংশ তার ২ বোন। হাজী চাঁনমিয়া সাড়ে ১৮ শতাংশ জমি নিজের নামে নামজারি করে জমিতে ৬ তলা ভবন নির্মাণ করে যা ফজরআলী গার্ডেন সিটি হিসেবে পরিচিত। চাঁনমিয়ার সাড়ে ১৮ শতাংশ জমির নামজারী খতিয়ান নং ১৯১০৩। নামজারীতে দু,টি দাগে জমির পরিমান উলুট পালট হওয়ার ভুল ধরা পড়লে সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেল (ভূমি) অফিসে মিস কেইস নং-১৫১/১৬ দায়ের করা হয়। পরে শোনানি শেষে ভুল সংশোধন করা হয়। পরবর্তীতে নতুন নামজারী করার জন্য আবেদন করেন যার খতিয়ান নং-২৬৬৭১ শুদ্ধ রূপে প্রকাশ হয়। সংশোধীত নামজারী সার্টিফাইড কপিও তিনি পেয়েছেন।
অভিযোগ জানা গেছে, মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে বাদশা মিয়া ও জয়নাল আবেদীনগং ওই জমির ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তার সহযোগীতায় উপরস্থ কর্মকর্তাদের ধোকা দিয়ে বাদশা মিয়াগং চাঁনমিয়ার দখলীয় সাড়ে ১৮ শতাংশ জমিতে গড়ে তুলা ৬ তলা মার্কেটের সাড়ে ১২ শতাংশ জমি নিজেদের নামে নামজারী করে ফেলে। যার নামজারী খতিয়ান নং ২৫৬৩৪। বিষয়টি জানতে পেরে চাঁনমিয়া নামজারীর বিরুদ্ধে মিসকেইচ মামলা করে যার নং ৮৮/২০১৯।
বাদশা মিয়া ও চাঁনমিয়া উভয়গংদের আইনজীর উপস্থিতিতে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩ টায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিদ্ধিরগঞ্জ সার্কেল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আনিসুল ইসলাম এর কার্যালয়ে আদালত বসে। শোনানী শেষে প্রমাণিত হয় বাদশা মিয়াগংরা জমির মালিক না। ভূয়া কাগজপত্র দেখিয়ে নিজেদের নামে সাড়ে ১২ শতাংশ জমি নামজারী করায়। পরে আদালত বাদশা মিয়া গংদের নামে সাড়ে ১২ শতাংশ জমির নামজারী বাতিল করে হাজী চাঁনমিয়ার পক্ষে রায় ঘোষনা করেন ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুল ইসলাম।
এ বিষয়ে হাজী চাঁন মিয়া জানায়, বাদশা মিয়াগংদের পূর্বপুরুষ এই জমি তার দাতার কাছে বিক্রি করে। জোতদার কর্তৃক ১৯২২ সালে নিলাম হয়েছিল ওই জমি। সেই ১৯২২ সাল থেকেই চাঁনমিয়ার দাতা জমির মালিক হয়। পরে পৈত্রিক সূত্রে জমির মালিক হয় চাঁন মিয়ার পিতা ফজর আলী। জমি নিয়ে বাদশাগংদের সাথে কয়েকটি মামলা হয়। প্রত্যেকটি মামলার রায় পায় চাঁমিয়াগং। এসও ও আর এস পর্চাও চাঁনমিয়াগংদের নামে হয়েছে। তার পরও বাদশাগং সুকৌশলে ভূয়া কাগজ তৈরি করে ওই জমির নাম জারী করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুল ইসলাম।