সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডের এক ব্যবসায়ীর উপর হামলা ও অফিস ভাংচুর করেছে সন্ত্রাসীরা। দশ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে সোমবার(৪ মার্চ) দুপুরে নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের সোনামিয়া বাজার এলাকায় আলম চাঁনের ভবনের দ্বিতীয় তলায় মেসার্স একে ট্রেডিং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এ হামলা চালায় মন্ডল বাহিনী। সন্ত্রাসী হামলার শিকার ব্যবসায়ীর নাম আল-আমিন। তিনি নাসিক ৬ নং ওয়র্র্ডের সুমিলপাড়া আইলপাড়া এলাকার প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা নান্নু মিয়ার ছেলে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
অভিযোগ জানা গেছে, আদমজী ইপিজেড শ্রমিকদের মধ্যে খাবার সরবরাহ করে আসছে ব্যবসায়ী আল-আমিন। তিনি সোনামিয়া বাজার এলাকায় আলম চাঁনের ভবনের দ্বিতীয় তলায় একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে মেসার্স একে ট্রেডিং নাম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। হামলার নেতৃত্বদানকারী জামাল ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আল-আমিনের কাছ। দাবিকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় এই হামলা মারধর ও অফিস ভাংচুর করে।
ব্যবসায়ী আল-আমিন জানায়, সোমবার দুপুরে আমি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে কাজ করিছলাম। দুপুর ২ টার দিকে হঠাৎ আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভবনের সিঁড়িতে আমাকে উচ্চস্বরে গালা গাল করার শব্দ পাই। তখন বের হয়ে দেখি দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সোনামিয়া বাজার এলাকার হাবিবুল্লাহ কসাইয়ের ছেলে ও জামাল কসাইয়ের ভাই চিহ্নিত মাদক সন্ত্রাসী বাবু (২৮), শাহজাহানের ছেলে রনি (৩৫), মৃত হাসেমের ছেলে আলাউদ্দিন (৪০) ও তার ভাই সালাউদ্দিন (৩০), হোসেন সরদারের ছেলে সিব্বির, হাসেমের ছেলে হান্নান ওরফে ফেনসি হান্নান ও শাহআলসহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জন সন্ত্রাসী আমার দিকে তেড়ে আসছে। এসময় আমি দ্রুত ভিতরে প্রবেশ করে অফিসের সাটার বন্ধ করে দেই। তখন তারা ক্ষিপ্ত হয়ে চাপাতি দিয়ে আমার অফিসের সাটারে এলোপাতারি কোপাতে থাকে এবং আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এমনকি আমি বের হয়ে আসার জন্য হুমকি প্রদর্শন করে বলতে থাকে আজ তোড়ে শেষ করে দিব। তখন ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পরিচিত জনদের জানালে তাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর শাহীন শাহ্ পারভেজ ও পরিদর্শক (তদন্ত) মো: নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থলে এসে আমাকে সাটারের ভিতর থেকে উদ্ধার করে। পুলিশ আসার খবর পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
তিনি আরো জানায়, এ সন্ত্রাসীরা প্রায়ই আমার অফিস এসে হুমকি ধমকি দিয়ে চাঁদা নিতো। গত রোববার এসে আমার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। আমি অস্বীকৃতি জানালে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে তারা চলে যায়। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ক্ষিপ্ত হয়ে আজ(সোমবার) দুপুরে তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে। বাজারের শত শত মানুষের সামনেই এই সন্ত্রাসীরা তান্ডব চালায়। যদি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে সময় মতো না আসতো তাহলে আমার অনেক বড় ক্ষতি হতো। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, হামলাকারীরা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এরা সবাই এ ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও জেলা বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি সিরাসুল ইসলাম মন্ডলের অনুসারী। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এসব সন্ত্রাসীদেরর সিরাজ মন্ডলের সাথে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শাহীন শাহ্ পারভেজ বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম কিন্তু আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে গেছে। আমি লোকজনের সাথে কথা বলেছি এটি চাঁদাবাজীর ঘটনা নয়। শুনেছি উপর থেকে পানি ফেলানোকে কেন্দ্র করে ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটায়। তবে এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি।